শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১০

মোবাইল ফোনসেটের এক মুঠো পরামর্শ


মোবাইল ফোনসেটের সাধারণ যত্ন-আত্তি
 মোবাইল ফোনের চার্জ দেওয়া নির্ভর করে ব্যাটারির এমএএইচের (মিলি-অ্যাম্প-আওয়ার) ওপর। ব্যাটারি এমএএইচ বেশি হলে চার্জ বেশি দিতে হয়। আর কম হলে ব্যাটারি স্বল্প সময় চার্জ করলেই পুরোপুরি চার্জ হয়ে যায়। চার্জ দেওয়ার সময় চার্জ হওয়ার সূচক (ইনডিকেটর) যখন থেমে যায়, তখন চার্জ দেওয়া বন্ধ করে দিতে হবে।
 মোবাইল ফোনে কখনো একটানা দুই ঘণ্টার বেশি চার্জ দেওয়া ঠিক নয়। সারা রাত মোবাইল ফোনের চার্জার বিদ্যুত্ সংযোগে লাগিয়ে রাখবেন না।
 চার্জ দেওয়ার সময় চার্জারের পিনটি হালকাভাবে ঢোকাতে হবে সেটের সকেটে। জোর করলে পিন ভেঙে যেতে পারে।
 চার্জ দেওয়ার পর যদি মোবাইল ফোন চালু না হয়, তবে এর সুইচ বন্ধ করে আবার চালু করুন।
 ব্যাটারি খোলার আগে পাওয়ার সুইচ বন্ধ করুন।
 সঠিক চার্জার দিয়ে সব সময় ব্যাটারি চার্জ করুন।
 কখনো ব্যাটারিতে অল্প সময় বা অতিরিক্ত সময় ধরে চার্জ করবেন না। এতে ব্যাটারির ‘সেট-অন’ অবস্থা এবং কথা বলার সময় কমে যাবে। এমনকি ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
 ২৫ শতাংশ চার্জ থাকা অবস্থায় লিথিয়াম-আয়ন এবং লিথিয়াম-আয়ন পলিমার ব্যাটারি চার্জ করা যেতে পারে।
 সব ধরনের ব্যাটারি সপ্তাহে অন্তত পক্ষে এক থেকে দুবার চার্জের আগে অবশ্যই সম্পূর্ণ নিঃশেষিত (ডিসচার্জড) করতে হবে। এতে ব্যাটারির স্থায়িত্ব বাড়ে।
 সম্পূর্ণ নতুন ব্যাটারি ক্ষেত্রে চার্জ নিয়মমতো সময় মেপে চার্জ দিলে ভালো হয়। নিকেল-মেটাল হাইড্রাইড ব্যাটারির ক্ষেত্রে ছয় থেকে আট ঘণ্টা, লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির ক্ষেত্রে তিন থেকে চার ঘণ্টা, লিথিয়াম-আয়ন পলিমার ব্যাটারির ক্ষেত্রে দুই থেকে তিন ঘণ্টা প্রথমবার চার্জ দেওয়া ভালো। দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর চার্জ নেওয়া বন্ধ হয়ে গেলে মোবাইল থেকে চার্জার খুলে ফেলুন।
 মোবাইল ফোনে চার্জের পরিমাণের সূচক (ইনডিগেটর) দাগ পূর্ণ থাকলে কখনোই চার্জ দেবেন না।
 যদি কখনো এক-দুই সপ্তাহের জন্য মোবাইল ফোন বন্ধ রাখেন, তা হলে অবশ্যই ব্যাটারি পুরো চার্জ করে মোবাইল থেকে ব্যাটারি খুলে রাখুন।
 ব্যাটারিসহ যদি মোবাইল ফোন এক দুই সপ্তাহ বন্ধ থাকে, তবে ফোনের ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। পরে মোবাইল ফোন চালু করতে চাইলে সমস্যা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ব্যাটারি খুলে আবার চার্জ দিলে ব্যাটারি তথা মোবাইল ফোন সচল হবে।
 চার্জারের প্লাগ সারাক্ষণ সকেটে লাগিয়ে রাখবেন না। চার্জ শেষ হওয়ার পর সকেট থেকে চার্জার খুলে ফেলুন। এতে চার্জার অনেক দিন ভালো থাকে।

 মোবাইল ফোন ভেজা হাতে ধরবেন না। এতে ফোনের ভেতর পানি ঢুকে যেতে পারে।
 শিশুদের হাতে মোবাইল ফোন না দেওয়াই ভালো। শিশুর মুখের লালা ফোনের ভেতর ঢুকলে সমস্যা হতে পারে।
 মোবাইল ফোনে চাপ দেবেন না। এতে এলসিডি পর্দাটা ফেটে যেতে পারে।
 লক্ষ রাখবেন, কখনো যেন মোবাইল ফোন হাত থেকে না পড়ে যায়। মোবাইল ফোনের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় হাত থেকে পড়ে গেলে। পড়ে গিয়ে বন্ধ হলে, সুইচ চালু করে দেখতে পারেন।চালু না হলো বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে।
 মোবাইল ফোন কখনো সরাসরি বন্ধ করবেন না। সুইচের মাধ্যমে নিয়ম মেনে বন্ধ করলে মোবাইল ফোন অনেক দিন ভালো থাকে।
 মোবাইল ফোন পানিতে পড়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তুলে ব্যাটারিটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খুলে ফেলতে হবে। ভালো করে শুকিয়ে নিয়ে সেটটা চালু না করে সার্ভিস সেন্টারে নিয়ে যান। পানিতে পড়ার পর যত দেরি করবেন, ততই মোবাইল ফোন নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
 দীর্ঘক্ষণ টানা কথা বললে অনেক সময় মোবাইল ফোন গরম হয়ে যায়। কিছুটা সময় সেট বন্ধ করে রাখুন।
 মোবাইল ফোন কখনো প্যান্টের পেছনের পকেটে রাখা ঠিক নয়।
 মোবাইল ফোন হঠাত্ করে কোনো কাজ না করলে (হ্যাং) ব্যাটারি খুলে আবার লাগাতে হবে। যদি কথা বলার সময় হ্যাং করে, তবে প্রথমেই মেমোরি কার্ড খুলতে হবে। মেমোরি কার্ড যদি না থাকে, তবে ব্যাটারি খুলে আবার লাগালে সমস্যার সমাধান হতে পারে।
 মোবাইল ফোনের তারহীন ব্লুটুথ সুবিধা সব সময় চালু রাখবেন না। এতে ভাইরাস আক্রমণের আশঙ্কা থাকে। ব্লুটুথের মাধ্যমে অডিও, ভিডিও গানের ফাইল সংগ্রহ করার সময় ভাইরাসের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।

 বর্ষাকালে মোবাইল ফোনে যেন বৃষ্টির পানি না ঢোকে সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে।
 মোবাইল ফোনের পর্দায় হাত না লাগানোই ভালো।
 মোবাইল ফোনে বাড়তি একটা খাপ ব্যবহার করা উচিত।
 মোবাইল ফোনে যে পরিমাণ মেমোরি আছে, তার চেয়ে কম পরিমাণ ফাইল থাকা ভালো। মেমোরির সমপরিমাণ গান বা অন্য কিছু থাকলে মোবাইল হ্যাং হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে।
 ভালোভাবে কথা ধারণ (ভয়েস রেকর্ড) করার জন্য মোবাইল ফোনটি বক্তার খুব কাছাকাছি রাখা উচিত।


 মোবাইল ফোনের সিমকার্ড কখনো ম্যানিব্যাগ বা ওয়ালেটে রাখা ঠিক নয়। এতে সিমকার্ড নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
 মোবাইল ফোনে অনেক সময় অপর প্রান্তের কথা খুব অস্পষ্ট শোনা যায়। এটা স্পিকার বা হেডফোন খারাপ হওয়ার কারণে নয়। দুটি কারণে এ সমস্যা হতে পারে—১. কথা বলার সময় হাত লেগে স্পিকারের ভলিউম কমে যেতে পারে। ২. লোহা বা ধাতব গুঁড়া মোবাইল ফোনে ঢুকে এ সমস্যা করতে পারে। এ জন্য কথা বলার সময় স্পিকারের ভলিউম বাড়িয়ে নিতে হবে।
 হাত থেকে পড়ে গিয়ে যদি পর্দায় কিছু না দেখা যায়, তবে পর্দা পরিবর্তন করতে হতে পারে।আগে লক্ষ রাখতে হবে ডিসপ্লের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে কি না।
পরামর্শ দিয়েছেন— মো. কামালহোসেন, স্বত্বাধিকারী, সাইম প্লাস ও ইলেকট্রনিকস, ঢাকা

মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট
মোবাইল ফোনে সীমিত আকারের ইন্টারনেট ওয়াপ (ওয়্যারলেস অ্যাপ্লিকেশন প্রটোকল) এবং পূর্ণাঙ্গ ওয়েব—এই দুই ধরনের ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। এ জন্য প্রথমে ওয়াপ বা ওয়েব ব্যবহার করা যায়—এমন ফোনসেট লাগবে। এরপর বিভিন্ন মোবাইল ফোন সেবাদাতার (অপারেটর) নিয়ম মেনে ইন্টারনেটের সংযোগ ব্যবহার করতে হবে।
গ্রামীণফোন
 পি১ প্যাকেজে যত ব্যবহার তত খরচ। এটি চালু করতে P1 লিখে ৫০০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 পোস্টপেইড গ্রাহকদের জন্য অসীম (আনলিমিটেড) সময়ের ইন্টারনেট ব্যবহার—খরচ মাসে ৮৩০ টাকা। এটি চালু করতে P2 লিখে ৫০০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 পোস্টপেইড গ্রাহকদের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে আনলিমিটেড ইন্টারনেট ব্যবহার—খরচ মাসে ৩৪৫ টাকা। চালু করতে P3 লিখে ৫০০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 পোস্টপেইড গ্রাহকদের জন্য দিনে নির্দিষ্ট পরিমাণ ইন্টারনেট ব্যবহার—খরচ ৬০ টাকা। P4 লিখে ৫০০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে—খরচ ৭০০ টাকা। এটি চালু করতে P5 লিখে ৫০০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 নির্দিষ্ট পরিমাণ ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে—খরচ ৩০০ টাকা। এটি চালু করতে P6 লিখে ৫০০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
বাংলালিংক
 যত খরচ তত বিল হিসেবে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে।
P1 লিখে ৩৩৪৩ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
একটেল
 নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করতে *৮৪৪৪*২০# লিখে ইন্টারনেট চালু করা যাবে—খরচ দিনে ২০ টাকা।
সিটিসেল
 Zoom লিখে ৯৬৬৬ নম্বরে পাঠিয়ে পছন্দ অনুযায়ী ইন্টারনেট প্যাকেজ নির্বাচন করতে হবে।
ওয়ারিদ
 ওয়েব বা ওয়াপ সমর্থিত মোবাইল ফোনে সংযোগ দিলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে কনফিগারেশন চলে আসবে। তা সংরক্ষিত (সেভ) করে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে। খরচ .০২/কেবি হিসেবে।
 মোবাইল ফোনের ধরন অনুযায়ী wap এবং internet চালু করতে হবে।
টেলিটক
 টেলিটক ইন্টারনেট ব্যবহার করতে reg লিখে ১১১ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। মাসিক আনলিমিটেডের জন্য unl এবং দৈনিক হিসেবে ব্যবহারের জন্য dunl লিখে ১১১ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।

এসএমএসে নানা কাজ
বিদ্যুত্ ও গ্যাসের বিল
 গ্রামীণফোন থেকে বিদ্যুত্ বিল (পিডিবি) পরিশোধের জন্য Reg BPDB হিসাব নম্বর লিখে ১২০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। এরপর নিরাপত্তা কোড আসবে।পরে এসএমএসের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
 গ্রামীণফোন থেকে বিদ্যুত্ বিল (ডিপিডিসি) পরিশোধের জন্য Reg DPDC হিসাব নম্বর লিখে ১২০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 গ্রামীণফোন থেকে ঢাকার বিদ্যুত্ বিল (ডেসকো) পরিশোধের জন্য Reg DSCO হিসাব নম্বর লিখে ১২০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 গ্রামীণফোন থেকে গ্যাস বিল (তিতাস) পরিশোধের জন্য Reg TTAS হিসাব নম্বর লিখে ১২০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 গ্রামীণফোন থেকে চট্টগ্রাম ওয়াসার বিল পরিশোধের জন্য Reg CWSA হিসাব নম্বর লিখে ১২০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 গ্রামীণফোন থেকে বাখরাবাদের গ্যাস বিল পরিশোধের জন্য Reg BGSL হিসাব নম্বর লিখে ১২০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
শেয়ারবাজারের তথ্য
 গ্রামীণফোন থেকে শেয়ারবাজারের তথ্য পেতে Bull লিখে ২০০০ নম্বরে এসএমএস পাঠালে সফটওয়্যার নামানোর লিংক পাওয়া যাবে। এ সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে শেয়ারবাজারের তথ্য পাওয়া যাবে।
 সফটওয়্যারটি নামানোর পর নিবন্ধন করতে BULL Reg লিখে ৪৬৩৬ নম্বরে এসএমএস পাঠিয়ে শেয়ারবাজারের তথ্যের জন্য অ্যাকাউন্ট চালু করা যাবে।
নানা রকম সেবা
 গ্রামীণফোনে বিভিন্ন সেবা পেতে অর্থাত্ অ্যাম্বুলেন্সের জন্য ambulance, পুলিশ স্টেশনের নম্বরের জন্য police, হাসপাতালের নম্বরের জন্য hosp, রক্তের খবর জানতে blood লিখে ২০০০ লিখে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 গ্রামীণফোনে বিকিকিনি করতে ইন্টারনেট সমর্থিত মোবাইল ফোন থেকে www.cellbazaar.com ঠিকানায় যেতে হবে।
 যেসব গ্রামীণফোন মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট নেই, সেগুলো থেকে কেনার জন্য buy লিখে এবং বিক্রির জন্য sell লিখে ৩৮৩৮ নম্বরে এসএমএম পাঠাতে হবে।
 একটেলে সংযোগ ব্যবহারকারীরা ওয়াপ সমর্থিত মোবাইল ফোন থেকে wap.aktelbazaar.com ঠিকানায় এবং ইন্টারনেট সমর্থিত ফোন থেকে www.aktelbazaar.com ঠিকানায় গিয়ে কেনাবেচা করতে পারবেন।
 যেসব একটেল মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট নেই, সেগুলো থেকে SMS লিখে ৮৪৮৪ নম্বরে এসএমএম পাঠাতে হবে।
 গ্রামীণফোন থেকে ২২৫৫ নম্বরে ফোন করে শিক্ষাসংক্রান্ত তথ্য জানা যাবে।
 গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক থেকে ৭৮৯ নম্বরে ফোন করলে তাত্ক্ষণিক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যাবে।
 একটেল থেকে ১০৬০০ নম্বরে ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যাবে।
 বাংলালিংক থেকে ৭৬৭৬ নম্বরে ফোন করে কৃষিবিষয়ক যেকোনো তথ্য পাওয়া যাবে।

যাদের হাতে পিডিএ
 পিডিএ বা পার্সোনাল ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট নামের যন্ত্রটিতে খুব সামান্য পরিমাণ তথ্য যোগ করা হলেও প্রতিদিন কম্পিউটারের সঙ্গে তথ্যগুলোর সমন্বয় করে নেওয়া (সিনক্রোনাইজিং) উচিত। কোনো কারণে পিডিএ বা এর মেমোরি কার্ড নষ্ট হয়ে গেলে ব্যবহারকারীর বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। কম্পিউটার ছাড়াও বাড়তি কোনো মেমোরি কার্ডে তথ্য সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
 দিনের বেশির ভাগ সময়ই পিডিএ ব্যবহার করা হয়, তাই দিনের শেষে অন্তত একবার হলেও এটি পরিষ্কার করে রাখুন।
 নির্দিষ্ট সময় পরপর এটি চার্জ করুন। ঠিকমতো খেয়াল করা না হলে প্রয়োজনের সময় চার্জ ফুরিয়ে যাবে। সাধারণত পিডিএর চার্জ মোবাইল ফোনের মতো দীর্ঘস্থায়ী নয়।
 লেখা বা আইকনের আকার খুব বড় না রাখা ভালো। ফলে পর্দায় একই সঙ্গে একাধিক অপশন দেখা যায় এবং কম স্ক্রল করতে হয়।
 দেশের বাইরে কোথাও যাওয়ার আগে সরাসরি সময় পরিবর্তন না করে সময়অঞ্চল (টাইমজোন) পরিবর্তন করুন। ফলে সংরক্ষণ করা কাজের সময়সূচি আলাদা করে বদলাতে হবে না। সময় ও তারিখ পরিবর্তন করার মেনু থেকে এ সুবিধাটি পাওয়া যাবে।
 কোনো অনুষ্ঠান বা বিষয়ভিত্তিক কোনো তথ্য সম্পর্কে ই-মেইল বা এসএমএস নোটিফিকেশন ব্যবহার করা যেতে পারে। www.google.com/calender ব্যবহার করে এ কাজটি করা যাবে। আগে নির্ধারণ করে দিলে অনুষ্ঠান বা সভার আগামবার্তা এসএমএস বা ই-মেইলের মাধ্যমে বিনা মূল্যে জানা যাবে।
 উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে চলা পিডিএর ভাইরাস একটি বড় সমস্যা। আক্রান্ত হওয়ার আগেই অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইনস্টল করুন।
 একটি প্রোগ্রাম চালু থাকা অবস্থায় অন্য প্রোগ্রাম না চালানো ভালো।
 প্রোগ্রাম চালু করার জন্য পিডিএ নির্দিষ্ট কিছু শর্টকাট কি দেওয়া থাকে। দরকারমতো শর্টকাট বদলে নিন।
 ওয়েবসাইটের ঠিকানা রাখার জন্য শুধু লিংকটি লিখে না রেখে অনলাইন বুকমার্ক ব্যবহার করা ভালো। অনলাইন বুকমার্ক পিডিএ ছাড়াও ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ কম্পিউটার থেকে ব্যবহার করা যায়।
 পিডিএ থেকে ছবি আদান-প্রদানের জন্য ই-মেইলের চেয়ে এমএমএস (মাল্টিমিডিয়া মেসেজ সার্ভিস) অনেক বেশি কার্যকর।
 অনেক পিডিএতে পিডিএফ ফাইল পড়ার সফটওয়্যার থাকে। না থাকলে অ্যাডবির ওয়েবসাইট (www.adobe.com) থেকে বিনা মূল্যে পাবেন অ্যাক্রোব্যাট রিডার।
 পিডিএর ব্লুটুথ সুবিধাটি ব্যবহার করার সময় ছাড়া অন্যান্য সময় এটি বন্ধ রাখুন। চালু থাকলে এটি কিছুক্ষণ পরপর ব্লুটুথ সক্রিয় অন্য যন্ত্র খুঁজতে থাকবে। দরকার ছাড়া এটা বন্ধ রাখুন, চার্জ বেশিক্ষণ থাকবে।
 পিডিএ থেকে ই-মেইল করতে ই-মেইল ক্লায়েন্ট ব্যবহার করা উচিত। ফলে বারবার নিজ থেকে ই-মেইল অ্যাকাউন্টে ঢুকতে হবে না। নতুন ই-মেইল এলে সফটওয়্যারটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা জানাবে।
 দৈনন্দিন কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য ক্যালেন্ডার বা শিডিউলার ব্যবহার করুন। পিডিএতে থাকা সফটওয়্যার ছাড়াও ওয়েবভিত্তিক প্রোগ্রাম ব্যবহার করতে পারেন।

কখন হ্যাঁ! কখন না!
 মসজিদ, মন্দির, শ্রেণীকক্ষ বা সভায় মোবাইল ফোনের রিংটোন বন্ধ রাখুন।
 পেট্রলপাম্প, গ্যাস স্টেশন বা অতি দাহ্য পদার্থ রয়েছে এমন স্থানে মোবাইল ফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকা ভালো।
 মোবাইল ফোনে খুব ধীরে কথা বললেও অন্য কেউ উপস্থিত থাকলে তার থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে কথা বলুন। খুব কাছে থেকে বললে অনিচ্ছা সত্ত্বেও অন্য কেউ আপনার কথা শুনতে আগ্রহী হতে পারে।
 অন্য কেউ উপস্থিত থাকলে ফোনে ব্যক্তিগত কথা বলবেন না।
 সাধারণ বুদ্ধি ব্যবহার করে বোঝার চেষ্টা করুন কোথায় মোবাইল ফোন বন্ধ রাখতে হবে। যেমন চাকরির সাক্ষাত্কার, উপস্থাপনা, গ্রন্থাগার বা জাদুঘরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সব সময় মোবাইল ফোন বন্ধ রাখা উচিত।
 কোনো কারণে কারও ফোন কল ধরতে দেরি হলে বা কল মিসড হয়ে গেলে পরে এ কারণটি জানিয়ে দেওয়া ভালো।

মোবাইল ফোনের সফটওয়্যার
অপেরা মিনি: ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য অপেরা মিনি বেশ কাজের সফটওয়্যার। এটি বেশির ভাগ মোবাইল ফোনে ব্যবহার করা যায়। এর ওয়েব ঠিকানা: www.opera.com/mini
গুগল ল্যাটিচিউড: মোবাইল ফোন থেকে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিতে পারবেন আপনার অবস্থান। www.google.com/latitude ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সেবাটি ব্যবহার করা যাবে। মোবাইল ফোন ব্যবহার উপযোগী গুগলের আরও বেশ কিছু সেবা সম্পর্কে জানা যাবে www.google.com/mobile/more ওয়েবসাইটে।
স্কাইপ: স্কাইপের মোবাইল ফোন সংস্করণটি ডাউনলোড করা যাবে www.skype.com/download/skype/skypelite ওয়েবসাইট থেকে।
ফেসবুক: মোবাইল থেকে ফেসবুক ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সাহায্য পাওয়া যাবে m.facebook.com সাইটে।
ইনস্ট্যান্ট মেসেঞ্জার: ইবাডি (www.ebuddy.com) মোবাইল ফোন থেকে চ্যাট করার জন্য বেশ জনপ্রিয় একটি সফটওয়্যার। এখান থেকে গুগলটক, ইয়াহু, এমএসএন এবং ফেসবুকে চ্যাট সুবিধা ব্যবহার করা যায়। এমন আরও কিছু প্রোগ্রাম হলো নিমবাজ (www.nimbuzz.com), মিগ৩৩ (www.mig33.com) ইত্যাদি।
গেমস: মোবাইল ফোনে খেলার উপযোগী গেম বিনা মূল্যে পাওয়ার ওয়েবসাইট হলো— www.freemobilephonegames.co.uk
www.mobilclub.org
মোবাইল ফোনে ব্যবহার করা যায় এমন প্রোগ্রামের বড় সংগ্রহ পাওয়া যাবে www.getjar.com ওয়েবসাইট থেকে।

মুঠোফোনের আলোকচিত্র
 মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় মেগাপিক্সেল বেশি থাকলে ছবির মান ভালো হয়।
 সব সময় আলো আছে—এমন জায়গায় ছবি তোলার চেষ্টা করুন।
 ছবি তোলার সময় হাত যেন না কাঁপে।
 রাতে ছবি তুলতে চাইলে ক্যামেরার ফ্ল্যাশ ও নাইট মোড ব্যবহার করুন।
 বেশি জুম করে ছবি তুলবেন না।
 ছবি তোলার পর তা এডিট অপশনে গিয়ে আপনার প্রয়োজনমতো সম্পাদনা করে নিন।
 বৃষ্টির সময় মোবাইল ফোনের ক্যামেরা দিয়ে ছবি না তোলাই ভালো।
 মোবাইল সেট দিয়ে ছবি তোলার সময় প্রথম বারে ফ্ল্যাশ আলো জ্বলে, এরপর ছবি ওঠে। তাই ছবি তোলার সময় খেয়াল রাখতে হবে, ফ্ল্যাশ জ্বলার পর যেন হাত না নড়ে যায়।
 লক্ষ রাখবেন, মোবাইল ফোনের ক্যামেরার লেন্সে যাতে কোনো ধরনের দাগ না পড়ে। দাগ পড়লে ছবি ভালো আসে না।
 মোবাইল সেটের ক্যামেরার লেন্স মাঝে মাঝে টিস্যু বা নরম কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করুন।

মোবাইল ফোনে বাংলা
বেশির ভাগ মোবাইল ফোনে এখন বাংলা এসএমএস বা ওয়েবসাইট দেখার সুবিধা থাকে। বাংলা ওয়েবসাইট দেখার জন্য অপেরা মিনি বেশ জনপ্রিয়। www.opera.com/mini ওয়েবসাইট থেকে এটি বিনা মূল্যে পাবেন। বাংলা দেখার সুবিধা চালু করতে প্রথমে অপেরা মিনি চালু করে ওয়েবসাইটের ঠিকানা লেখার জায়গায় লিখতে হবে opera:config এরপর ‘use bitmap fonts for complex script’ অপশনটি চালু করে দিতে হবে। এ কাজটি করার পর থেকে বাংলা ওয়েবসাইটগুলোয় সঠিকভাবে বাংলা দেখা যাবে।

স্পর্শকাতর পর্দায় সতর্কতা
 যেসব মোবাইল ফোন সেটে স্পর্শকাতর পর্দা (টাচস্ক্রিন) আছে, সেগুলো একটু বেশিই স্পর্শকাতর। এসব পর্দায় যাতে কোনো ধরনের ধুলা-ময়লা, তেল বা পানি না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সব সময় পরিষ্কার হাত বা কাঠি (স্টাইলাস) দিয়ে পর্দা ব্যবহার করতে হবে।
 জোরে চাপ দিয়ে কোনো কাজ করা উচিত নয়। এতে মোবাইল সেটের স্থায়ী ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
 সরাসরি সূর্যের আলোয় এটি ব্যবহার করা যাবে না। কারণ রোদের তাপে টাচস্ক্রিন নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
 সাধারণ ধুলা-ময়লা পরিষ্কার করার জন্য সাবান বা বিশেষ দ্রবণ ব্যবহার করলে স্ক্রিনের ক্ষতি হবে। সরাসরি কোনো ধরনের দ্রবণ স্ক্রিনে স্প্রে করা যাবে না। পরিষ্কার করার জন্য সব সময় নরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে।
 পরিষ্কার করার সময় সেট বন্ধ করে নিতে হবে।
 এ ধরনের মোবাইল সেট/পিডিএর জন্য বিশেষ মোড়ক ব্যবহার করা যেতে পারে

ব্যাটারির যত্ন
ব্লুটুথ, ওয়াইফাই, ইনফ্রারেড, জিপিএস বন্ধ রাখা: দরকার ছাড়া মোবাইল সেটের ব্লুটুথ, ওয়াইফাই, ইনফ্রারেড, জিপিএস অপশন বন্ধ রাখুন। এ প্রোগ্রামগুলো যতক্ষণ চালু থাকে ততক্ষণই কাছের যন্ত্র বা নেটওয়ার্ক খুঁজতে থাকে। এতে ব্যাটারি বেশি খরচ হয়।
কিপ্যাড টোন ও কম্পন বন্ধ রাখা: কিপ্যাড টোন ও কম্পন (ভাইব্রেশন) বন্ধ রাখলে মোবাইল সেটের চার্জের স্থায়িত্ব দীর্ঘ হয়। যদিও অনেকে জরুরি সভায় মোবাইল সেট ভাইব্রেশন মোডে রাখেন।
মনিটরের ঔজ্জ্বল্য কমানো: মনিটরের ঔজ্জ্বল্য (ব্রাইটনেস) কমিয়ে রাখা উচিত, তবে তা এতটা কম নয়, যাতে দেখতে অসুবিধা হয়।
ডিসপ্লে পরিবর্তন: ডিসপ্লে সেটিং থেকে পাওয়ার সেভার টাইম ও লাইটআউট টাইমের মান কমিয়ে দেওয়া ভালো।
অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম বন্ধ রাখা: অপ্রয়োজনীয় কোনো প্রোগ্রাম চালু আছে কি না, পরীক্ষা করে সেগুলো বন্ধ করে দিন।
গেম: অধিকাংশ গেমই অনেক বেশি পরিমাণে ব্যাটারির চার্জ ব্যবহার করে থাকে।
ব্যাটারি সেইভ অপশন: মোবাইল সেটে ব্যাটারি সেইভ অপশন থাকলে তা ব্যবহার করা ভালো।
সাধারণ যত্ন: ব্যাটারিতে কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করা, পানি বা অন্য কোনো তরল পদার্থ দিয়ে ভেজানো অথবা অত্যধিক গরম কোনো স্থানে রাখা উচিত নয়।

প্রথম আলো

1 টি মন্তব্য: