শুক্রবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী, ২০১০

মোবাইল ফোনসেটের এক মুঠো পরামর্শ


মোবাইল ফোনসেটের সাধারণ যত্ন-আত্তি
 মোবাইল ফোনের চার্জ দেওয়া নির্ভর করে ব্যাটারির এমএএইচের (মিলি-অ্যাম্প-আওয়ার) ওপর। ব্যাটারি এমএএইচ বেশি হলে চার্জ বেশি দিতে হয়। আর কম হলে ব্যাটারি স্বল্প সময় চার্জ করলেই পুরোপুরি চার্জ হয়ে যায়। চার্জ দেওয়ার সময় চার্জ হওয়ার সূচক (ইনডিকেটর) যখন থেমে যায়, তখন চার্জ দেওয়া বন্ধ করে দিতে হবে।
 মোবাইল ফোনে কখনো একটানা দুই ঘণ্টার বেশি চার্জ দেওয়া ঠিক নয়। সারা রাত মোবাইল ফোনের চার্জার বিদ্যুত্ সংযোগে লাগিয়ে রাখবেন না।
 চার্জ দেওয়ার সময় চার্জারের পিনটি হালকাভাবে ঢোকাতে হবে সেটের সকেটে। জোর করলে পিন ভেঙে যেতে পারে।
 চার্জ দেওয়ার পর যদি মোবাইল ফোন চালু না হয়, তবে এর সুইচ বন্ধ করে আবার চালু করুন।
 ব্যাটারি খোলার আগে পাওয়ার সুইচ বন্ধ করুন।
 সঠিক চার্জার দিয়ে সব সময় ব্যাটারি চার্জ করুন।
 কখনো ব্যাটারিতে অল্প সময় বা অতিরিক্ত সময় ধরে চার্জ করবেন না। এতে ব্যাটারির ‘সেট-অন’ অবস্থা এবং কথা বলার সময় কমে যাবে। এমনকি ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
 ২৫ শতাংশ চার্জ থাকা অবস্থায় লিথিয়াম-আয়ন এবং লিথিয়াম-আয়ন পলিমার ব্যাটারি চার্জ করা যেতে পারে।
 সব ধরনের ব্যাটারি সপ্তাহে অন্তত পক্ষে এক থেকে দুবার চার্জের আগে অবশ্যই সম্পূর্ণ নিঃশেষিত (ডিসচার্জড) করতে হবে। এতে ব্যাটারির স্থায়িত্ব বাড়ে।
 সম্পূর্ণ নতুন ব্যাটারি ক্ষেত্রে চার্জ নিয়মমতো সময় মেপে চার্জ দিলে ভালো হয়। নিকেল-মেটাল হাইড্রাইড ব্যাটারির ক্ষেত্রে ছয় থেকে আট ঘণ্টা, লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারির ক্ষেত্রে তিন থেকে চার ঘণ্টা, লিথিয়াম-আয়ন পলিমার ব্যাটারির ক্ষেত্রে দুই থেকে তিন ঘণ্টা প্রথমবার চার্জ দেওয়া ভালো। দুই থেকে তিন ঘণ্টা পর চার্জ নেওয়া বন্ধ হয়ে গেলে মোবাইল থেকে চার্জার খুলে ফেলুন।
 মোবাইল ফোনে চার্জের পরিমাণের সূচক (ইনডিগেটর) দাগ পূর্ণ থাকলে কখনোই চার্জ দেবেন না।
 যদি কখনো এক-দুই সপ্তাহের জন্য মোবাইল ফোন বন্ধ রাখেন, তা হলে অবশ্যই ব্যাটারি পুরো চার্জ করে মোবাইল থেকে ব্যাটারি খুলে রাখুন।
 ব্যাটারিসহ যদি মোবাইল ফোন এক দুই সপ্তাহ বন্ধ থাকে, তবে ফোনের ব্যাটারি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। পরে মোবাইল ফোন চালু করতে চাইলে সমস্যা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে ব্যাটারি খুলে আবার চার্জ দিলে ব্যাটারি তথা মোবাইল ফোন সচল হবে।
 চার্জারের প্লাগ সারাক্ষণ সকেটে লাগিয়ে রাখবেন না। চার্জ শেষ হওয়ার পর সকেট থেকে চার্জার খুলে ফেলুন। এতে চার্জার অনেক দিন ভালো থাকে।

 মোবাইল ফোন ভেজা হাতে ধরবেন না। এতে ফোনের ভেতর পানি ঢুকে যেতে পারে।
 শিশুদের হাতে মোবাইল ফোন না দেওয়াই ভালো। শিশুর মুখের লালা ফোনের ভেতর ঢুকলে সমস্যা হতে পারে।
 মোবাইল ফোনে চাপ দেবেন না। এতে এলসিডি পর্দাটা ফেটে যেতে পারে।
 লক্ষ রাখবেন, কখনো যেন মোবাইল ফোন হাত থেকে না পড়ে যায়। মোবাইল ফোনের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় হাত থেকে পড়ে গেলে। পড়ে গিয়ে বন্ধ হলে, সুইচ চালু করে দেখতে পারেন।চালু না হলো বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে হবে।
 মোবাইল ফোন কখনো সরাসরি বন্ধ করবেন না। সুইচের মাধ্যমে নিয়ম মেনে বন্ধ করলে মোবাইল ফোন অনেক দিন ভালো থাকে।
 মোবাইল ফোন পানিতে পড়ে গেলে সঙ্গে সঙ্গে তুলে ব্যাটারিটা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খুলে ফেলতে হবে। ভালো করে শুকিয়ে নিয়ে সেটটা চালু না করে সার্ভিস সেন্টারে নিয়ে যান। পানিতে পড়ার পর যত দেরি করবেন, ততই মোবাইল ফোন নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
 দীর্ঘক্ষণ টানা কথা বললে অনেক সময় মোবাইল ফোন গরম হয়ে যায়। কিছুটা সময় সেট বন্ধ করে রাখুন।
 মোবাইল ফোন কখনো প্যান্টের পেছনের পকেটে রাখা ঠিক নয়।
 মোবাইল ফোন হঠাত্ করে কোনো কাজ না করলে (হ্যাং) ব্যাটারি খুলে আবার লাগাতে হবে। যদি কথা বলার সময় হ্যাং করে, তবে প্রথমেই মেমোরি কার্ড খুলতে হবে। মেমোরি কার্ড যদি না থাকে, তবে ব্যাটারি খুলে আবার লাগালে সমস্যার সমাধান হতে পারে।
 মোবাইল ফোনের তারহীন ব্লুটুথ সুবিধা সব সময় চালু রাখবেন না। এতে ভাইরাস আক্রমণের আশঙ্কা থাকে। ব্লুটুথের মাধ্যমে অডিও, ভিডিও গানের ফাইল সংগ্রহ করার সময় ভাইরাসের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন।

 বর্ষাকালে মোবাইল ফোনে যেন বৃষ্টির পানি না ঢোকে সে দিকে লক্ষ রাখতে হবে।
 মোবাইল ফোনের পর্দায় হাত না লাগানোই ভালো।
 মোবাইল ফোনে বাড়তি একটা খাপ ব্যবহার করা উচিত।
 মোবাইল ফোনে যে পরিমাণ মেমোরি আছে, তার চেয়ে কম পরিমাণ ফাইল থাকা ভালো। মেমোরির সমপরিমাণ গান বা অন্য কিছু থাকলে মোবাইল হ্যাং হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি থাকে।
 ভালোভাবে কথা ধারণ (ভয়েস রেকর্ড) করার জন্য মোবাইল ফোনটি বক্তার খুব কাছাকাছি রাখা উচিত।


 মোবাইল ফোনের সিমকার্ড কখনো ম্যানিব্যাগ বা ওয়ালেটে রাখা ঠিক নয়। এতে সিমকার্ড নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে।
 মোবাইল ফোনে অনেক সময় অপর প্রান্তের কথা খুব অস্পষ্ট শোনা যায়। এটা স্পিকার বা হেডফোন খারাপ হওয়ার কারণে নয়। দুটি কারণে এ সমস্যা হতে পারে—১. কথা বলার সময় হাত লেগে স্পিকারের ভলিউম কমে যেতে পারে। ২. লোহা বা ধাতব গুঁড়া মোবাইল ফোনে ঢুকে এ সমস্যা করতে পারে। এ জন্য কথা বলার সময় স্পিকারের ভলিউম বাড়িয়ে নিতে হবে।
 হাত থেকে পড়ে গিয়ে যদি পর্দায় কিছু না দেখা যায়, তবে পর্দা পরিবর্তন করতে হতে পারে।আগে লক্ষ রাখতে হবে ডিসপ্লের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে কি না।
পরামর্শ দিয়েছেন— মো. কামালহোসেন, স্বত্বাধিকারী, সাইম প্লাস ও ইলেকট্রনিকস, ঢাকা

মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট
মোবাইল ফোনে সীমিত আকারের ইন্টারনেট ওয়াপ (ওয়্যারলেস অ্যাপ্লিকেশন প্রটোকল) এবং পূর্ণাঙ্গ ওয়েব—এই দুই ধরনের ইন্টারনেট ব্যবহার করা যায়। এ জন্য প্রথমে ওয়াপ বা ওয়েব ব্যবহার করা যায়—এমন ফোনসেট লাগবে। এরপর বিভিন্ন মোবাইল ফোন সেবাদাতার (অপারেটর) নিয়ম মেনে ইন্টারনেটের সংযোগ ব্যবহার করতে হবে।
গ্রামীণফোন
 পি১ প্যাকেজে যত ব্যবহার তত খরচ। এটি চালু করতে P1 লিখে ৫০০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 পোস্টপেইড গ্রাহকদের জন্য অসীম (আনলিমিটেড) সময়ের ইন্টারনেট ব্যবহার—খরচ মাসে ৮৩০ টাকা। এটি চালু করতে P2 লিখে ৫০০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 পোস্টপেইড গ্রাহকদের জন্য নির্দিষ্ট সময়ে আনলিমিটেড ইন্টারনেট ব্যবহার—খরচ মাসে ৩৪৫ টাকা। চালু করতে P3 লিখে ৫০০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 পোস্টপেইড গ্রাহকদের জন্য দিনে নির্দিষ্ট পরিমাণ ইন্টারনেট ব্যবহার—খরচ ৬০ টাকা। P4 লিখে ৫০০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে—খরচ ৭০০ টাকা। এটি চালু করতে P5 লিখে ৫০০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 নির্দিষ্ট পরিমাণ ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে—খরচ ৩০০ টাকা। এটি চালু করতে P6 লিখে ৫০০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
বাংলালিংক
 যত খরচ তত বিল হিসেবে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে।
P1 লিখে ৩৩৪৩ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
একটেল
 নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ইন্টারনেট ব্যবহার করতে *৮৪৪৪*২০# লিখে ইন্টারনেট চালু করা যাবে—খরচ দিনে ২০ টাকা।
সিটিসেল
 Zoom লিখে ৯৬৬৬ নম্বরে পাঠিয়ে পছন্দ অনুযায়ী ইন্টারনেট প্যাকেজ নির্বাচন করতে হবে।
ওয়ারিদ
 ওয়েব বা ওয়াপ সমর্থিত মোবাইল ফোনে সংযোগ দিলেই স্বয়ংক্রিয়ভাবে কনফিগারেশন চলে আসবে। তা সংরক্ষিত (সেভ) করে ইন্টারনেট ব্যবহার করা যাবে। খরচ .০২/কেবি হিসেবে।
 মোবাইল ফোনের ধরন অনুযায়ী wap এবং internet চালু করতে হবে।
টেলিটক
 টেলিটক ইন্টারনেট ব্যবহার করতে reg লিখে ১১১ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। মাসিক আনলিমিটেডের জন্য unl এবং দৈনিক হিসেবে ব্যবহারের জন্য dunl লিখে ১১১ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।

এসএমএসে নানা কাজ
বিদ্যুত্ ও গ্যাসের বিল
 গ্রামীণফোন থেকে বিদ্যুত্ বিল (পিডিবি) পরিশোধের জন্য Reg BPDB হিসাব নম্বর লিখে ১২০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে। এরপর নিরাপত্তা কোড আসবে।পরে এসএমএসের নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করতে হবে।
 গ্রামীণফোন থেকে বিদ্যুত্ বিল (ডিপিডিসি) পরিশোধের জন্য Reg DPDC হিসাব নম্বর লিখে ১২০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 গ্রামীণফোন থেকে ঢাকার বিদ্যুত্ বিল (ডেসকো) পরিশোধের জন্য Reg DSCO হিসাব নম্বর লিখে ১২০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 গ্রামীণফোন থেকে গ্যাস বিল (তিতাস) পরিশোধের জন্য Reg TTAS হিসাব নম্বর লিখে ১২০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 গ্রামীণফোন থেকে চট্টগ্রাম ওয়াসার বিল পরিশোধের জন্য Reg CWSA হিসাব নম্বর লিখে ১২০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 গ্রামীণফোন থেকে বাখরাবাদের গ্যাস বিল পরিশোধের জন্য Reg BGSL হিসাব নম্বর লিখে ১২০০ নম্বরে এসএমএস পাঠাতে হবে।
শেয়ারবাজারের তথ্য
 গ্রামীণফোন থেকে শেয়ারবাজারের তথ্য পেতে Bull লিখে ২০০০ নম্বরে এসএমএস পাঠালে সফটওয়্যার নামানোর লিংক পাওয়া যাবে। এ সফটওয়্যার ব্যবহারের মাধ্যমে শেয়ারবাজারের তথ্য পাওয়া যাবে।
 সফটওয়্যারটি নামানোর পর নিবন্ধন করতে BULL Reg লিখে ৪৬৩৬ নম্বরে এসএমএস পাঠিয়ে শেয়ারবাজারের তথ্যের জন্য অ্যাকাউন্ট চালু করা যাবে।
নানা রকম সেবা
 গ্রামীণফোনে বিভিন্ন সেবা পেতে অর্থাত্ অ্যাম্বুলেন্সের জন্য ambulance, পুলিশ স্টেশনের নম্বরের জন্য police, হাসপাতালের নম্বরের জন্য hosp, রক্তের খবর জানতে blood লিখে ২০০০ লিখে এসএমএস পাঠাতে হবে।
 গ্রামীণফোনে বিকিকিনি করতে ইন্টারনেট সমর্থিত মোবাইল ফোন থেকে www.cellbazaar.com ঠিকানায় যেতে হবে।
 যেসব গ্রামীণফোন মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট নেই, সেগুলো থেকে কেনার জন্য buy লিখে এবং বিক্রির জন্য sell লিখে ৩৮৩৮ নম্বরে এসএমএম পাঠাতে হবে।
 একটেলে সংযোগ ব্যবহারকারীরা ওয়াপ সমর্থিত মোবাইল ফোন থেকে wap.aktelbazaar.com ঠিকানায় এবং ইন্টারনেট সমর্থিত ফোন থেকে www.aktelbazaar.com ঠিকানায় গিয়ে কেনাবেচা করতে পারবেন।
 যেসব একটেল মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট নেই, সেগুলো থেকে SMS লিখে ৮৪৮৪ নম্বরে এসএমএম পাঠাতে হবে।
 গ্রামীণফোন থেকে ২২৫৫ নম্বরে ফোন করে শিক্ষাসংক্রান্ত তথ্য জানা যাবে।
 গ্রামীণফোন ও বাংলালিংক থেকে ৭৮৯ নম্বরে ফোন করলে তাত্ক্ষণিক স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যাবে।
 একটেল থেকে ১০৬০০ নম্বরে ফোন করে স্বাস্থ্যসেবা পাওয়া যাবে।
 বাংলালিংক থেকে ৭৬৭৬ নম্বরে ফোন করে কৃষিবিষয়ক যেকোনো তথ্য পাওয়া যাবে।

যাদের হাতে পিডিএ
 পিডিএ বা পার্সোনাল ডিজিটাল অ্যাসিস্ট্যান্ট নামের যন্ত্রটিতে খুব সামান্য পরিমাণ তথ্য যোগ করা হলেও প্রতিদিন কম্পিউটারের সঙ্গে তথ্যগুলোর সমন্বয় করে নেওয়া (সিনক্রোনাইজিং) উচিত। কোনো কারণে পিডিএ বা এর মেমোরি কার্ড নষ্ট হয়ে গেলে ব্যবহারকারীর বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। কম্পিউটার ছাড়াও বাড়তি কোনো মেমোরি কার্ডে তথ্য সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
 দিনের বেশির ভাগ সময়ই পিডিএ ব্যবহার করা হয়, তাই দিনের শেষে অন্তত একবার হলেও এটি পরিষ্কার করে রাখুন।
 নির্দিষ্ট সময় পরপর এটি চার্জ করুন। ঠিকমতো খেয়াল করা না হলে প্রয়োজনের সময় চার্জ ফুরিয়ে যাবে। সাধারণত পিডিএর চার্জ মোবাইল ফোনের মতো দীর্ঘস্থায়ী নয়।
 লেখা বা আইকনের আকার খুব বড় না রাখা ভালো। ফলে পর্দায় একই সঙ্গে একাধিক অপশন দেখা যায় এবং কম স্ক্রল করতে হয়।
 দেশের বাইরে কোথাও যাওয়ার আগে সরাসরি সময় পরিবর্তন না করে সময়অঞ্চল (টাইমজোন) পরিবর্তন করুন। ফলে সংরক্ষণ করা কাজের সময়সূচি আলাদা করে বদলাতে হবে না। সময় ও তারিখ পরিবর্তন করার মেনু থেকে এ সুবিধাটি পাওয়া যাবে।
 কোনো অনুষ্ঠান বা বিষয়ভিত্তিক কোনো তথ্য সম্পর্কে ই-মেইল বা এসএমএস নোটিফিকেশন ব্যবহার করা যেতে পারে। www.google.com/calender ব্যবহার করে এ কাজটি করা যাবে। আগে নির্ধারণ করে দিলে অনুষ্ঠান বা সভার আগামবার্তা এসএমএস বা ই-মেইলের মাধ্যমে বিনা মূল্যে জানা যাবে।
 উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে চলা পিডিএর ভাইরাস একটি বড় সমস্যা। আক্রান্ত হওয়ার আগেই অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ইনস্টল করুন।
 একটি প্রোগ্রাম চালু থাকা অবস্থায় অন্য প্রোগ্রাম না চালানো ভালো।
 প্রোগ্রাম চালু করার জন্য পিডিএ নির্দিষ্ট কিছু শর্টকাট কি দেওয়া থাকে। দরকারমতো শর্টকাট বদলে নিন।
 ওয়েবসাইটের ঠিকানা রাখার জন্য শুধু লিংকটি লিখে না রেখে অনলাইন বুকমার্ক ব্যবহার করা ভালো। অনলাইন বুকমার্ক পিডিএ ছাড়াও ডেস্কটপ বা ল্যাপটপ কম্পিউটার থেকে ব্যবহার করা যায়।
 পিডিএ থেকে ছবি আদান-প্রদানের জন্য ই-মেইলের চেয়ে এমএমএস (মাল্টিমিডিয়া মেসেজ সার্ভিস) অনেক বেশি কার্যকর।
 অনেক পিডিএতে পিডিএফ ফাইল পড়ার সফটওয়্যার থাকে। না থাকলে অ্যাডবির ওয়েবসাইট (www.adobe.com) থেকে বিনা মূল্যে পাবেন অ্যাক্রোব্যাট রিডার।
 পিডিএর ব্লুটুথ সুবিধাটি ব্যবহার করার সময় ছাড়া অন্যান্য সময় এটি বন্ধ রাখুন। চালু থাকলে এটি কিছুক্ষণ পরপর ব্লুটুথ সক্রিয় অন্য যন্ত্র খুঁজতে থাকবে। দরকার ছাড়া এটা বন্ধ রাখুন, চার্জ বেশিক্ষণ থাকবে।
 পিডিএ থেকে ই-মেইল করতে ই-মেইল ক্লায়েন্ট ব্যবহার করা উচিত। ফলে বারবার নিজ থেকে ই-মেইল অ্যাকাউন্টে ঢুকতে হবে না। নতুন ই-মেইল এলে সফটওয়্যারটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা জানাবে।
 দৈনন্দিন কাজ সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য ক্যালেন্ডার বা শিডিউলার ব্যবহার করুন। পিডিএতে থাকা সফটওয়্যার ছাড়াও ওয়েবভিত্তিক প্রোগ্রাম ব্যবহার করতে পারেন।

কখন হ্যাঁ! কখন না!
 মসজিদ, মন্দির, শ্রেণীকক্ষ বা সভায় মোবাইল ফোনের রিংটোন বন্ধ রাখুন।
 পেট্রলপাম্প, গ্যাস স্টেশন বা অতি দাহ্য পদার্থ রয়েছে এমন স্থানে মোবাইল ফোন ব্যবহার থেকে বিরত থাকা ভালো।
 মোবাইল ফোনে খুব ধীরে কথা বললেও অন্য কেউ উপস্থিত থাকলে তার থেকে কিছুটা দূরে গিয়ে কথা বলুন। খুব কাছে থেকে বললে অনিচ্ছা সত্ত্বেও অন্য কেউ আপনার কথা শুনতে আগ্রহী হতে পারে।
 অন্য কেউ উপস্থিত থাকলে ফোনে ব্যক্তিগত কথা বলবেন না।
 সাধারণ বুদ্ধি ব্যবহার করে বোঝার চেষ্টা করুন কোথায় মোবাইল ফোন বন্ধ রাখতে হবে। যেমন চাকরির সাক্ষাত্কার, উপস্থাপনা, গ্রন্থাগার বা জাদুঘরের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সব সময় মোবাইল ফোন বন্ধ রাখা উচিত।
 কোনো কারণে কারও ফোন কল ধরতে দেরি হলে বা কল মিসড হয়ে গেলে পরে এ কারণটি জানিয়ে দেওয়া ভালো।

মোবাইল ফোনের সফটওয়্যার
অপেরা মিনি: ইন্টারনেট ব্যবহার করার জন্য অপেরা মিনি বেশ কাজের সফটওয়্যার। এটি বেশির ভাগ মোবাইল ফোনে ব্যবহার করা যায়। এর ওয়েব ঠিকানা: www.opera.com/mini
গুগল ল্যাটিচিউড: মোবাইল ফোন থেকে আপনার বন্ধুদের জানিয়ে দিতে পারবেন আপনার অবস্থান। www.google.com/latitude ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সেবাটি ব্যবহার করা যাবে। মোবাইল ফোন ব্যবহার উপযোগী গুগলের আরও বেশ কিছু সেবা সম্পর্কে জানা যাবে www.google.com/mobile/more ওয়েবসাইটে।
স্কাইপ: স্কাইপের মোবাইল ফোন সংস্করণটি ডাউনলোড করা যাবে www.skype.com/download/skype/skypelite ওয়েবসাইট থেকে।
ফেসবুক: মোবাইল থেকে ফেসবুক ব্যবহার করার জন্য বিভিন্ন ধরনের সাহায্য পাওয়া যাবে m.facebook.com সাইটে।
ইনস্ট্যান্ট মেসেঞ্জার: ইবাডি (www.ebuddy.com) মোবাইল ফোন থেকে চ্যাট করার জন্য বেশ জনপ্রিয় একটি সফটওয়্যার। এখান থেকে গুগলটক, ইয়াহু, এমএসএন এবং ফেসবুকে চ্যাট সুবিধা ব্যবহার করা যায়। এমন আরও কিছু প্রোগ্রাম হলো নিমবাজ (www.nimbuzz.com), মিগ৩৩ (www.mig33.com) ইত্যাদি।
গেমস: মোবাইল ফোনে খেলার উপযোগী গেম বিনা মূল্যে পাওয়ার ওয়েবসাইট হলো— www.freemobilephonegames.co.uk
www.mobilclub.org
মোবাইল ফোনে ব্যবহার করা যায় এমন প্রোগ্রামের বড় সংগ্রহ পাওয়া যাবে www.getjar.com ওয়েবসাইট থেকে।

মুঠোফোনের আলোকচিত্র
 মোবাইল ফোনের ক্যামেরায় মেগাপিক্সেল বেশি থাকলে ছবির মান ভালো হয়।
 সব সময় আলো আছে—এমন জায়গায় ছবি তোলার চেষ্টা করুন।
 ছবি তোলার সময় হাত যেন না কাঁপে।
 রাতে ছবি তুলতে চাইলে ক্যামেরার ফ্ল্যাশ ও নাইট মোড ব্যবহার করুন।
 বেশি জুম করে ছবি তুলবেন না।
 ছবি তোলার পর তা এডিট অপশনে গিয়ে আপনার প্রয়োজনমতো সম্পাদনা করে নিন।
 বৃষ্টির সময় মোবাইল ফোনের ক্যামেরা দিয়ে ছবি না তোলাই ভালো।
 মোবাইল সেট দিয়ে ছবি তোলার সময় প্রথম বারে ফ্ল্যাশ আলো জ্বলে, এরপর ছবি ওঠে। তাই ছবি তোলার সময় খেয়াল রাখতে হবে, ফ্ল্যাশ জ্বলার পর যেন হাত না নড়ে যায়।
 লক্ষ রাখবেন, মোবাইল ফোনের ক্যামেরার লেন্সে যাতে কোনো ধরনের দাগ না পড়ে। দাগ পড়লে ছবি ভালো আসে না।
 মোবাইল সেটের ক্যামেরার লেন্স মাঝে মাঝে টিস্যু বা নরম কাপড় দিয়ে পরিষ্কার করুন।

মোবাইল ফোনে বাংলা
বেশির ভাগ মোবাইল ফোনে এখন বাংলা এসএমএস বা ওয়েবসাইট দেখার সুবিধা থাকে। বাংলা ওয়েবসাইট দেখার জন্য অপেরা মিনি বেশ জনপ্রিয়। www.opera.com/mini ওয়েবসাইট থেকে এটি বিনা মূল্যে পাবেন। বাংলা দেখার সুবিধা চালু করতে প্রথমে অপেরা মিনি চালু করে ওয়েবসাইটের ঠিকানা লেখার জায়গায় লিখতে হবে opera:config এরপর ‘use bitmap fonts for complex script’ অপশনটি চালু করে দিতে হবে। এ কাজটি করার পর থেকে বাংলা ওয়েবসাইটগুলোয় সঠিকভাবে বাংলা দেখা যাবে।

স্পর্শকাতর পর্দায় সতর্কতা
 যেসব মোবাইল ফোন সেটে স্পর্শকাতর পর্দা (টাচস্ক্রিন) আছে, সেগুলো একটু বেশিই স্পর্শকাতর। এসব পর্দায় যাতে কোনো ধরনের ধুলা-ময়লা, তেল বা পানি না পড়ে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। সব সময় পরিষ্কার হাত বা কাঠি (স্টাইলাস) দিয়ে পর্দা ব্যবহার করতে হবে।
 জোরে চাপ দিয়ে কোনো কাজ করা উচিত নয়। এতে মোবাইল সেটের স্থায়ী ক্ষতি হয়ে যেতে পারে।
 সরাসরি সূর্যের আলোয় এটি ব্যবহার করা যাবে না। কারণ রোদের তাপে টাচস্ক্রিন নষ্ট হয়ে যেতে পারে।
 সাধারণ ধুলা-ময়লা পরিষ্কার করার জন্য সাবান বা বিশেষ দ্রবণ ব্যবহার করলে স্ক্রিনের ক্ষতি হবে। সরাসরি কোনো ধরনের দ্রবণ স্ক্রিনে স্প্রে করা যাবে না। পরিষ্কার করার জন্য সব সময় নরম কাপড় ব্যবহার করতে হবে।
 পরিষ্কার করার সময় সেট বন্ধ করে নিতে হবে।
 এ ধরনের মোবাইল সেট/পিডিএর জন্য বিশেষ মোড়ক ব্যবহার করা যেতে পারে

ব্যাটারির যত্ন
ব্লুটুথ, ওয়াইফাই, ইনফ্রারেড, জিপিএস বন্ধ রাখা: দরকার ছাড়া মোবাইল সেটের ব্লুটুথ, ওয়াইফাই, ইনফ্রারেড, জিপিএস অপশন বন্ধ রাখুন। এ প্রোগ্রামগুলো যতক্ষণ চালু থাকে ততক্ষণই কাছের যন্ত্র বা নেটওয়ার্ক খুঁজতে থাকে। এতে ব্যাটারি বেশি খরচ হয়।
কিপ্যাড টোন ও কম্পন বন্ধ রাখা: কিপ্যাড টোন ও কম্পন (ভাইব্রেশন) বন্ধ রাখলে মোবাইল সেটের চার্জের স্থায়িত্ব দীর্ঘ হয়। যদিও অনেকে জরুরি সভায় মোবাইল সেট ভাইব্রেশন মোডে রাখেন।
মনিটরের ঔজ্জ্বল্য কমানো: মনিটরের ঔজ্জ্বল্য (ব্রাইটনেস) কমিয়ে রাখা উচিত, তবে তা এতটা কম নয়, যাতে দেখতে অসুবিধা হয়।
ডিসপ্লে পরিবর্তন: ডিসপ্লে সেটিং থেকে পাওয়ার সেভার টাইম ও লাইটআউট টাইমের মান কমিয়ে দেওয়া ভালো।
অপ্রয়োজনীয় প্রোগ্রাম বন্ধ রাখা: অপ্রয়োজনীয় কোনো প্রোগ্রাম চালু আছে কি না, পরীক্ষা করে সেগুলো বন্ধ করে দিন।
গেম: অধিকাংশ গেমই অনেক বেশি পরিমাণে ব্যাটারির চার্জ ব্যবহার করে থাকে।
ব্যাটারি সেইভ অপশন: মোবাইল সেটে ব্যাটারি সেইভ অপশন থাকলে তা ব্যবহার করা ভালো।
সাধারণ যত্ন: ব্যাটারিতে কোনো কিছু দিয়ে আঘাত করা, পানি বা অন্য কোনো তরল পদার্থ দিয়ে ভেজানো অথবা অত্যধিক গরম কোনো স্থানে রাখা উচিত নয়।

প্রথম আলো

মঙ্গলবার, ২৩ ফেব্রুয়ারী, ২০১০

বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশী দেখা সেরা ১০০ সাইট

এই সারসংক্ষেপটি পাওয়া যাবে না। পোস্ট দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন

কিভাবে সাইটে কাঙ্খিত ভিজিটর পাবেন

টিউন করেছেন : ইমতিয়াজ মাহমুদ সজিব | প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ জুন, ২০০৯ |

কিভাবে সাইটে কাঙ্খিত ভিজিটর পাবেন |

আজকাল অনেকেই শখের বশে অথবা ইনকাম করার ইচ্ছা নিয়ে ওয়েব সাইট তৈরি করে। কিন্তু যখন দেখা যায় সাইটের ভিজিটর বলতে কেবল নিজে এবং কিছু বন্ধু বান্ধব তখন অনেকেরই আগ্রহ উবে যায় । আজ তাই তাদের জন্য এই টিউন যারা নিজের ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়াতে চান ।
১। মানসম্মত সাইট

একটি সাইটে ভিজিটর পাওয়ার প্রধান একটি উপায় হচ্ছে মানসম্মত সাইট তৈরি করা । একটি বাজে সাইট তৈরি করে প্রাথমিকভাবে বিজ্ঞাপন এর মাধ্যমে ভিজিটর পাওয়া গেলেও একটা সময় গিয়ে আর পাওয়া যায় না । মানসম্মত সাইটের উদাহরন দেয়া যায় টেকটিউনস, আমার ব্লগ ইত্যাদি ।
২। ছোট ও আকর্ষনীয় ডোমেইন

সাইটের ডোমেইন নেম ছোট হলে ভাল । তবে ডোমেইন ছোট করতে গিয়ে www.khj12.com টাইপের অর্থহীন ডোমেইন না নেয়াই ভালো। সাইটের ডোমেইন নেম হচ্ছে সেই সাইটের শিরোনামের মত । সুতরাং নাম শুনেই যাতে সাইটটি কি বিষয়ক সে সম্পর্কে ধারনা করা যায় এরকম ডোমেইন হলে ভালো । যেমনঃ turorialbd.com নাম থেকেই বোঝা যাচ্ছে এ সাইটে টিউটোরিয়াল জাতীয় কিছু আছে । তবে যারা blogspot, wordpress ইত্যাদি ব্যাবহার করেন তাদের হতাশ হওয়ার কিছু নেই । blogspot এর এমন কিছু সাইট রয়েছে যা বছরে কয়েক মিলিয়ন ভিজিটর পায় ।
৩। ভালো কন্টেন্ট

সাইটে অবশ্যই ভালো কন্টেন্ট থাকতে হবে । হতে পারে সেটা প্রয়োজনীয়, মজার, কিম্বা শেখার মত কিছু । না হলে ভিজিটর ধরে রাখা যাবে না । যেমন টেকটিউনস । আমার মনে হয় যার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে সামান্য আগ্রহও আছে সে একবার টেকটিউনসে ঢুকলে আর কখনো টেকটিউনস ছেড়ে যাবে না ।
৪। সাইট দ্রুত লোড হওয়া

আপনার সাইট খুবই আকর্ষনীয় করে তৈরি করেছেন । দেখলে ছোখ জুড়িয়ে যায় । আপনার সাইট লোড হতে লাগে ২-৩ মিনিট । আমি কখনোই দ্বিতীয় বার আপনার সাইটে ঢুকবো না । যেসব সাইট লোড হতে ৩০-৪৫ সেকেন্ডের বেশি লাগে সেসব সাইটে সাধারনত ভিজিটর কম যায় । আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে একটি উদাহর দেই ।

কিভাবে সাইটে কাঙ্খিত ভিজিটর পাবেন |

www.catswhocode.com সাইটটিতে আমি একবার ভিজিট করতে গেলাম । কিন্তু একি কয়েক মিনিট পার হয়ে যাচ্ছে সাইটের হোম পেজের দেখা নেই । অনেক পরে তার দেখা পেলাম । সাইটের অন্যান্য লিংক পেজও লোড হতে অনেক সময় নেয় । ফল কি হল ? সাইটটি যথেস্ট মানসম্মত হওয়ার পরও আমি দু’বারের বেশি সাইটটিতে ঢুকিনি । আমার ব্লগ বিজ্ঞান প্রযুক্তি.comfavicons?domain=www.bigganprojukti কিভাবে সাইটে কাঙ্খিত ভিজিটর পাবেন | এর লোডিং টাইম ফাস্ট রাখার জন্য খুবই সাধারন ডিজাইন এবং কম প্লাগিন ব্যবহার করি ।
৫। বিজ্ঞাপন

এটি একটি গুরুত্বপূর্ন পয়েন্ট । আমি বলবোনা আপনার সাইটে বিজ্ঞাপন দেয়া যাবে না । আমি বললেও আপনাদের সেটি মানার কোন কারন নেই । কারন বিজ্ঞাপন ছাড়া আপনার সাইটের মাধ্যমে উপার্জন করার খুব একটা সম্ভাবনা নেই । কিন্তু বিজ্ঞাপন একটু বুঝেশুনে দেয়া উচিত । তবে আপনার যদি প্রধান ইচ্ছা থাকে যে করেই হোক ইনকাম করতে হবে ভিজিটর কি মনে করলো সেটা কিছুই না … তাহলে আপনি যেখানে সেখানে, চিপায় চাপায়, পোস্টের ভিতরে, প্রয়োজনীয় লিংকের উপরে নিচে ইচ্ছামত বিজ্ঞাপন দিতে পারেন । এতে করে হবে কী ? ভিজিটর ভুল করে সাইটের লিংক ভেবে তাতে ক্লিক করবে । তারপর যখন দেখবে অন্য একটি সাইটে চলে গেল এবং সেখানে প্রয়োজনীয় কিছুই নেই … তখন সে নিশ্চিত ভাবেই আপনার সাইটের উপর উপর বিরক্ত হবে । এবং পরবর্তীতে আপনার সাইটে সে না আসার আশংকাই বেশি । এক্ষেত্রে আমার বক্তব্য হচ্ছে বিজ্ঞাপন এমনভাবে দেয়া উচিত যাতে তা আপনার সাইটের সৌন্দর্য নস্ট না করে এবং ভিজিটর বুঝতে পারে এটি বিজ্ঞাপন । তার প্রয়োজন হলে সেই ক্লিক করবে । একটি সাইট থেকে যদি আমি উপকৃত হই তাহলে আমার উচিত বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে তাদের কিছু আয়ের সুযোগ করে দেয়া । এটা মানবিক দৃস্টিকোণ থেকে বললাম ।

# এতক্ষন যা বললাম তা এজন্যই যাতে আপনার সাইটের ভিজিটররা সন্তুট থাকে এবং আবারো আপনার সাইটে আসার আগ্রহ বোধ করে । এবার লিখবো কিভাবে আপনার সাইটে ভিজিটর আনবেন । এ বিষয়টি নিয়ে শাকিল ভাই আগেই কিছুটা আলোচনা করেছেন । তাই আমি সংক্ষেপে বলে যাবো ।
১। সাইট রিভিউ করা

বিভিন্ন ব্লগে আপনার সাইটের রিভিউ লিখুন । এক্ষেত্রে আপনার সাইটটি মানসম্মত হলে ভালো হয় । তাহলে সবাই এটিকে বিজ্ঞাপন টাইপের রিভিউ মনে করবে না এবং ইতিবাচক ভাবেই নিবে ।
২। সার্চ ইঞ্জিনে সাইট সাবমিট

বিভিন্ন জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিনে আপনার সাইটের url সাবমিট করুন । এ সম্পর্কে শাকিল ভাই আগেই বিস্তারিত লিখেছেন ।
৩। পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে রিভিউ পাঠান

বিভিন্ন পত্রিকার আইসিটি বিভাগে আপনার সাইট সম্পর্কে লিখে পাঠান । কম্পিউটার ম্যগাজিনগুলোতেও পাঠাতে পারেন ।
৪। লিংক এক্সচেঞ্জ

আপনার পরিচিতজন কিংবা বন্ধুবান্ধবের সাথে সাইটের লিংক এক্সচেঞ্জ করুন । তাহলে তাদের সাইট থেকে আপনি কিছু ভিজিটর পাবেন এবং তারাও কিছু ভিজিটর পাবে ।
৫। ওয়েব ডিরেক্টরিতে সাইট সাবমিট

ফ্রী ওয়েব ডিরেক্টরিগুলোতে আপনার সাইটের url সাবমিট করুন ।
৬। ফেসবুক ও টুইটার

সামাজিক যোগাযোগের সাইট ফেসবুক ও টুইটারকেও ব্যবহার করতে পারেন আপনার সাইট প্রোমোট করার জন্য।

facebook কিভাবে সাইটে কাঙ্খিত ভিজিটর পাবেন | twitter কিভাবে সাইটে কাঙ্খিত ভিজিটর পাবেন |

এভাবে এগিয়ে গেলে আপনার সাইটের জনপ্রিয়তা পাওয়ার যথেস্ট সম্ভাবনা রয়েছে ।

বৃহস্পতিবার, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০১০

তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!!

টিউন করেছেন : TareqMahbub | প্রকাশিত হয়েছে : ১০ ডিসেম্বর, ২০০৯ |

p1 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

খ্রিস্টের জন্মেরও শত শত বছর আগে মিশরে গড়ে উঠেছিল এক অসাধারণ সভ্যতা। যেখানে তারা গড়ে তুলেছিল সপ্তাশ্চর্যের মধ্যে সবচেয়ে প্রাচীন রহস্যমন্ডিত পিরামিড। এটা অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে সবচেয়ে প্রাচীন হলেও সপ্তাশ্চর্যের মধ্যে একমাত্র পিরামিডই এখনো পৃথিবীর বুকে মাথা উচু করে দাড়িয়ে আছে।

p sturct তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

যার কাঠামো আধুনিক বিজ্ঞানের সকল শাখায়ই খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং আর্কিটেকচারাল হিসাবে এ ধরনের কাঠামো সবচেয়ে বেশি ভূমিকম্প প্রতিরোধক এবং স্থায়ী হয়ে থাকে। এটা খুবই সম্প্রতি দেখা গেছে যে পিরাপিড আসলে একট রেশনাল স্ট্রাকচার।

pst 2 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

পিরামিডের গঠনশৈলীর প্রভাব সারা পৃথিবী ব্যাপী। পৃথিবীর সকল প্রান্তেই পিরামিডের আদলে বহুস্থাপনা স্থাপন করা হয়েছে।

p22p তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

একবার ভাবুনতো, উপরের চিত্রের মানুষগুলোর তুলনায় তীর চিহ্ন নির্দেশিত বড় বড় পাথরগুলো কিভাবে এত উপরে তোলা হয়েছিল। অনেক পদ্ধতি থাকতে পারে কিন্তু আমরা কোন সময়ের কথা আলোচানা করছি তা একবার ভাবতে হবে।

এখন থেকে প্রায় ১৪০০ বছর আগে আমাদের মুহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.) মৃত্যুবরণ করেন। তারও প্রায় ৬০০ বছর আগে জিশু-খ্রিস্ট জন্মগ্রহণ করে। আমাদের আজকের আলোচ্য বিষয় তারও প্রায় ৩৫০০ বছর আগেকার।

অর্থাৎ এখন থেকে প্রায় ১৪০০ + ৪০০ + ৩৫০০ = ৫৫০০ বছর আগে মানুষের তুলনায় অস্মাভাবিক রকম বড় পাথরগুলো কিভাবে এত উপরে তোলা হয়েছিল ?? আধুনিক যুগের মানুষের কাছে এটা খুব বড় একটা রহস্য। সাধারণ রোডের উপর দিয়ে কোন গাড়ী বা যন্ত্রছাড়া এত বড় পাথর টেনে আনা কত অসাধ্য তা আমরা সবাই কল্পনা করেতে পারি। কিন্তু মিশুরর মরুভূমির বালুর উপর দিয়ে এত বড় পাথর টেনে আনা তা কত অসাধ্য তা আমাদের কল্পনার বাহিরে। কেউ কখনো বালির উপর দিয়ে সাইকেল চালাতে গেলেই দেখবেন বালি কিভাবে তার উপর দিয়ে চলমান বস্তুকে টেনে ধরে।

তখনকার সময়ে মিশরে এমন কোন প্রযুক্তি ছিল না যারা দ্বার তারা এ বিশাল বিশাল স্থাপনা গুলো তৈরী করতে পারে না।

একারনেই হয়তোবা অনেকেই এ বিশাল স্থাপনাগুলোর পেছনে কোন রহস্যময় অতিপ্রাকৃত শক্তির অস্তিত্ত্ব অনুভব করেন।

p3 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

তখনকার যুগে মিশরের লোকেরা ফারাও রাজাদের নিজেরদের দেবতা মনে করতো এবং মৃত্যুর পর তাদের পরবর্তী জীবনে চলার জন্য তার সমাধিতে তার মমিকৃত মৃতদেহের সাথে প্রচুর পরিমানে ধন সম্পদও দিয়ে দিত। পরে ফারাও রাজাদের এ সমাধিকে নিরাপদ করে দেয়ার জন্য এর উপর তৈরী করা হত পিরামিড আকৃতির কাঠামো।

p4 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

এখন পর্যন্ত গবেষনা অনুসারে 1539 BC থেকে 1075 BC পর্যন্ত পিরামিডের মত করে বা নির্ভেজাল লাইমস্টোন কেটে প্রায় ৬৩ টি সমাধি তৈরী করা হয়েছিল। যার বেশির ভাগেই অনেক দীর্ঘ এবং ক্রমে নিম্নগামী অসংখ্যা ছোট বড় করিডরের জটিল বিন্যাসের মাধ্যমে অবশেষে গিয়ে ফারাওদের সমাধিতে গিয়ে শেষ হয়েছে। এ সমাধিগুলোতে নানা রকমের প্রতীক, দেয়ালে খোদাইকৃত ছবি, অন্যজগতে ভ্রমনের তথ্য এবং নতুন জীবনের প্রয়োজনীয় সকল উপাদান দেয়া থাকতো। ধন-সম্পত্তির কথাতো আগেই বলেছি। এর রুমগুলোর একদম কেন্দ্রে থাকতো স্বর্ণমিন্ডিত ফারাও রাজাদের শবাধার।

p5 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

ফারাও রাজারদের সমাধিগুলোর একটি নমুনা চিত্র

এ রুমগুলো খুবই সতর্কতার সাথে সীল করে দেয়া হতো এবং এ সমাধির মূল্যবান দ্রব্য রক্ষা করার জন্য তখনকার মিশরের শ্রেষ্ঠ আর্কিটেকরা চোরদের ধোকা দেয়ার উপযোগি ডিজাইন করার দায়িত্ব পেত। মাঝে মাঝে প্যাসেইজ ওয়েগুলো বন্ধ করার জন্য বিশাল এবং মজবুত গ্রানাইটের প্লাগ ব্যবহার করা হতো। চোরদেরকে দমন করার জন্য নকল দরজা, গোপন রুম ইত্যাদি অসংখ্য ব্যবস্থার পরও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সমাধির প্রবেশ প্রথে কোন অভিশাপ দিয়ে দেয়া হতো।

কিন্তু এ সকল পূর্বসাবধানগুলোর বেশির ভাগই ব্যর্থ হয়েছিল। প্রাচীন যুগের চোর এবং ডাকাতেরা তাদের নিজস্ব পদ্ধতিতে ঠিকই সমাধির পথ খুজে বের করত এবং সকল ধন-সম্পত্তি আত্নসাৎ করতো।

সেই একই কারনেই অর্থাৎ গুপ্তধনের আসায় মিশরে গবেষকরা হন্যে হয়ে সমাধিগুলোতে ঘুরে বেড়াত। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মিশরের অতিপ্রাচীন স্থাপত্য আবিষ্কার বিষয়ক অভিযানগুলো পূর্ণাঙ্গ আঙ্গিকে শুরু হয় ১৮ শতাব্দীতে।

১৯ শতাব্দীতে এসে ইউরোপীয়রাও এ গুপ্তধনের সন্ধ্যানে আগ্রহী হয়ে উঠে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই তাদেরকে হতাশ হতে হয়েছিল কারন তারা অনেক গবেষনা করে কোন সমাধি আবিষ্কার করে দেখত তাদের আগেই কেউ না কেউ গুপ্তধন শরীয়ে নিয়েছে।

p6 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

১৮ শতাব্দীতেও সমাধিগুলোতে যে কোন অভিশাপের অস্তিত্ত্ব থাকতে পারে এটা সাধারন মানুষ জানত না। কিন্তু ১৯ শতকের প্রথম দিকে ১৯২২ সালে হাওয়ার্ড কার্টার ও তার দল তুতেন খামুন নামক একজন ফারাও রাজার সমাধি এবং তাতে প্রচুর পরিমানে ধন-সম্পত্তি খুজে পান। তারপর থেকেই সমাধিগুলোতে যে অভিশাপও বিদ্যমান থাকতে পারে তা সবার নজরে আসে। কারন এ সমাধিটির প্রবেশপথে খোদিত ছিল একটি অভিশাপ। যা এখন সারা বিশ্বেই তুতেন খামুনের অভিশাপ নামে পরিচিত।

আমার আজকের টিউনের বিষয়ও তাই –

p7 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

হাওয়ার্ড কার্টার

১৮৯১ সালের কথা হাওয়ার্ড কার্টার নামক একজন অল্পবয়স্ক ইংলিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ মিশরের মাটিতে পা রাখেন। মিশরের প্রাচীন স্থাপনা নিয়ে তার প্রচন্ড আগ্রহ কারন স্থাপত্য শিল্পের এত প্রাচীন এবং সুসংবদ্ধ নমুনা পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া সম্ভব নয়। বছরের পর বছর তিনি কাজ করে গেলেন। তার অদম্য শিল্পগুনকে কাজে লাগিয়ে রানী হৎসিপসুটের মন্দিরের দেয়ালের ছবিগুলোর নমুনা তৈরী করলেন প্রায় ছয় বছর ধরে।

মিশরে থাকাকালীন বছরগুলোতে তিনি তার প্রাপ্ত গবেষনা এবং অনুসন্ধান থেকে এটা অনুভব করছিলেন যে কমপক্ষে একটি আনাবিষ্কৃত সমাধি এখনো মিশরে রয়েছে। আর তা হচ্ছে ফারাও মধ্যে একেবারেই অপরিচিত রাজা তুতেন খামুনের সমাধি এবং তার ধারনাই সত্যি ছিল।

*************

p8 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |
তুতেন খামুন

ফারাওদের ১৮ তম রাজবংশের রাজাদের মধ্যে তুতেন খামুন ছিলেন ১১ বা ১২ তম। তিনি 1333 – 1324 B.C.E. কারো কারো মতে 1336 – 1327 B.C.E. পর্যন্ত মিশরের রাজত্ব করেন। তিনি রানী আনখেসেনপাতিন নাম অল্প বয়স্ক এক যুবুতীকে বিয়ে করেন। অনেক গবেষকের মতে রানী আনখেসেনপাতিন আসলে তুতেন খামুনের বোন ছিলেন।

p9 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

তুতেন খামুনের পিতা আখেন-আতেন

তুতেন খামুনের পিতার নাম ছিল আখেন-আতেন। তার পিতার পরই তিনি সিংহাশনে বসেন। তার পিতা “আতেন” (সূর্য দেবতা) নামক একটি নতুন ধর্ম গ্রহন করার জন্য জোর প্রচেষ্টা চালান। আগে মিশরের লোকেরা “আমুন” (বায়ু এবং শ্বাস নিঃশ্বাসের দেবতা) এর উপাসক ছিল। তার পিতা তখনকার মিশরের জনগনের উপর তার সৃষ্ট ধর্মটি চাপিয়ে দিতে চাপ প্রয়োগ শুরু করে এবং পূর্বের ধর্মীয় উপাসনালয় এবং স্থাপনাগুলো ধ্বংস করা শুরু করে। তার লক্ষ ছিল আমুন নামটি বিলুপ্ত করা। ফলে তৎকালীন মিশরের জনগনে মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। তখন তারা পিতা মারা যান কিন্তু কি কারনে কেউ জানে না ? তবে অধিকাংশ গবেষকের মতেই তাকে হত্যা করা হয়েছিল।

p10 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

তুতেন খামুন পিতার মৃত্যুর পর মাত্র নয় বছর বয়সে সিংহাসনে আরোহন করেন এবং আবার পুরাতন ধর্ম অর্থাৎ “আমুন” এর উপাসনা প্রচলন করেন এবং সে অনুসারে নিজের নাম পরিবর্তন করে জনগনকে আশ্বস্ত করেন।

তুতেন খামুনের প্রকৃত নাম ছিল তার পিতার মত তুতেন-খাতেন এবং তার স্ত্রীর নাম ছিল রানী আনখেসেনপাতিন। কিন্তু তার পিতাকে সাপোর্ট দেয়ার জন্য সে শীঘ্রই নীজের নাম তুতেন-খাতেন থেকে তুতেন-খামুনে এবং স্ত্রীর নাম আনখেনপাতিন-আমুনে পরিবর্তন করেন।

p11 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

হায়ারোগ্লিফিতে লিখা তুতেন খামুনের নাম

গবেষকদের মধ্যে তুতেন খামুনের নাম নিয়ে যথেষ্ট মতবেদ রয়েছে। কারো কারো মতে তার নাম তুতেন-খামুন, কারো মতে তুতেন-খামেন আবার কারো কারো মতে তুতেন-খাতন। প্রকৃত পক্ষে তার নাম গুলো বেশির ভাগই হায়ারোগ্লিফি হরফে লিখা ছিল। যার অর্থ আধুনিক সভ্য মানুষের কাছে প্রায় ১৮০০ বছর দুর্বোধ্য ছিল এবং তার অর্থ উদ্ধারের পদ্ধতি আবিষ্কৃত হয়েছে মাত্র ১৯ শতকে।

p12 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

হায়ারোগ্লিফির একটি নমুনা

ভাষাকে লিখে প্রকাশ করার সবচেয়ে প্রাচীন পদ্ধতির একটি ছিল এই হায়ারোগ্রাফি। এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত সবচেয়ে প্রাচীন হায়ারোগ্লিফিক লিখাটি প্রায় খ্রিস্টের জন্মেরও প্রায় ৩৩০০ বা ৩২০০ বছর পূর্বে লিখা। হায়ারোগ্লিফিতে কোন Vowel নেই। এ কারনে ঠিক কিভাবে হায়ারোগ্লিফি উচ্চারন করতে হবে এটা বের করা প্রায় অসম্ভব।

আর একারনেই তুতেন খামুনের নামের সঠিক উচ্চারন নিয়ে নানাজন নানা মত প্রকাশ করে।

p13 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

আয় (Ay)

ইতিহাসের কোথাও এটা খুজে পাওয়া যায়নি কিভাবে তুতেন খামেনের মৃত্যু হয়েছিল। কিন্তু বেশির ভাগ গবেষকেরই ধারনা ছিল তাকে হত্যা করা হয়েছে। তুতেন খামুন দুই দুইটি মৃত সন্তান জন্ম দিয়েছিলেন। তবে অনেক গবেষক এটা বিশ্বাস করেন যেহেতু তুতেন খামুনের কোন বংশধর ছিল না তাই তাকে হত্যা করলেই তৎকালীন রাজাকে সাহায্য করার জন্য সর্বোচ্চ পদে অধিষ্ঠিত “আয় (Ay)” সিংহাশনের দখল খুব সহজেই পেয়ে যেত। একারনেই “আয়” তাকে হত্যা করে। এ হত্যা কান্ডে তুতেন খামুনের স্ত্রী এবং তাকে বহনের কাজে নিয়োজিত গাড়ির চালকও জড়িত বলে অনেকেই মত প্রকাশ করেন।

p1414 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

ফারাও রাজাদের সামনে হোরেম-হ্যাব

এটা সত্য হওয়ার যথেষ্ট কারনও রয়েছে কারন তুতেন খামেনের মৃত্যুর পর তার পরবর্তি রাজা হান “আয়” এবং তার কাছ থেকে ক্ষমতা দখলকারী তৎকালীন সৈনাপতি “হোরেম-হ্যাব”। উভয়েই সমস্ত রাজকীয় দলিল দস্তাবেজ, খোদিত দেয়াল লিখন হতে তুতেন খামেনের নাম মুছে দেন এবং তার সম্পর্কিত যাবতীয় জিনিস ধ্বংস করে দেন। ফলে ইতিহাস থেকে তুতেন খামেনের নাম মুছে যায় চিরতরে। কিন্তু ভুল ক্রমে কতিপয় খুবই সামান্য কিছু বিল্ডং এবং ছোদ দ্রব্যসামগ্রীতে তার নাম রয়ে যায়। ১৯২২ -১৯২৩ সালের আগে তাই ছিল “তুতেন খামেন নামক একজন ফারাও রাজা ছিলেন” তার প্রমান।

তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

তুতেন খামুনের এক্সরে করা করোটির ছবি

তুতেন খামুনের সমাধির আবিষ্কারের পর তার শরীর প্রায় তিনবার এক্সরে করে পরীক্ষা করা হয়েছিল। সর্বশেষ এক্সরের তথ্যমতে মিশর, ইতালি, সুইস এবং ন্যাশনাল জিওগ্রাফির বিশেষজ্ঞরা একমত প্রকাশ করেন যে, কোন কারনে তুতেন খামুনের বাম পা মারাত্নকভাবে আঘাত প্রাপ্ত হয় এবং সে পায়ের হাড়ে চিড় দেখা দেয়। ফলে খুবই অল্প সময়েই তুতেন খামুনের মৃত্যু ঘটে।

p16 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |
তুতেন খামুনের মমি

সংক্ষেপে তুতেন খামেনের বাহ্যিক গঠন:

মাথা: সম্পূর্ণ মুন্ডিত।

চোখ: বিস্তৃত।

কান: ৭.৫ mm ব্যাস বিশিষ্ট ছিদ্র যুক্ত।

করোটি: সম্পূর্ণ খালি। (মস্তিষ্ক)

আক্কেল দাঁত: সামান্য উত্থিত।

উচ্চতা: ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি।

বয়স: প্রায় ১৮।

************

আসুন আমরা আবার সেই হাওয়ার্ড কার্টারের কাহিনীতে ফিরে যাই। (অভিশাপের শুরু)

(মিশরে থাকাকালীন বছরগুলোতে তিনি তার প্রাপ্ত গবেষনা এবং অনুসন্ধান থেকে এটা অনুভব করছিলেন যে কমপক্ষে একটি আনাবিষ্কৃত সমাধি এখনো মিশরে রয়েছে। আর তা হচ্ছে ফারাও মধ্যে একেবারেই অপরিচিত রাজা তুতেন খামুনের সমাধি এবং তার ধারনাই সত্যি ছিল।) তার পর থেকে:

p17 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

লর্ড কার্নার্বন

হাওয়ার্ড কার্টার তার বিশ্বাসকে কাজে পরিনত করতে অর্থাৎ এ সমাধিটি খুজে বের করতে লর্ড কার্নার্বন নামক একজন সম্পদশালী লোকের সাহায্য পেলেন। লর্ড কার্নার্বন হাওয়ার্ড কার্টারকে তার সমস্ত অভিযানের খরচের যোগান দিলেন।

p18 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

কিং ভ্যালী (যেখানে ফারাও রাজাদের সমাধিত করা হতো)

তখন সবাই ধরানা করত, কিং ভ্যালীতে অর্থাৎ তৎকালীন মিশরের রাজাদের সমাধির জন্য নির্দিষ্ট উপত্যকায় যত সমাধি ছিল তার সবগুলোই ইতিমধ্যে আবিষ্কার হয়ে গেছে এবং বেশির ভাগ সমাধিরই সম্পত্তি ইতিমধ্যেই চোর-ডাকাতেরা লুটপাট করে নিয়েছে। এটা বুঝাই গিয়েছিল কিং ভ্যালীতে আবিষ্কার কারার মতো আর কিছুই বাকী নেই।

হলোও তাই। পাঁচ বছর ধরে অদম্য হাওয়ার্ড কার্টার তার অভিযানের দল নিয়ে সম্পূর্ণ কিং ভ্যালী চষে বেড়ালেন অসংখ্যা জায়গা খুড়লেন কিন্তু কাজে কাজ কিছুই হল না। এটা বোঝাই যাচ্ছিল তার ৫ বছর যাবত শুধু বিফলেই নষ্ট করেছেন।

১৯২২ সালের দিকে লর্ড কার্নার্বন হাওয়ার্ড কার্টারকে ইংল্যান্ডে ডেকে পাঠান এবং জানান যে তিন আর এ আভিযানের খরচ বহন করবেন না। হাওয়ার্ড কার্টারের পাঁচ বছরের সমস্ত কষ্ট বৃথা যাবে এটা ভেবেই তিনি শেষ আরেক সিজন খোড়াখোড়ির কাজের জন্য অর্থ দিতে কার্নার্বনকে রাজি করান।

p19 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

হলুদ ক্যানারী পাখি

এবার মিশরে আসার সময় তিনি সাথে করে একটি হলুদ ক্যানারী পাখি নিয়ে আসেন। ইংরেজিতে “ক্যানারী” এর একটি অপ্রচলিত অর্থ হল গুপ্তচর। হাওয়ার্ড কার্টারের দলের সুপারভাইজার একারনেই তাকে বলেছিল “গোল্ডেন বার্ড” এটি হয়ত আমাদেরকে সে গুপ্ত সমাধির সন্ধান এনে দিবে। মনে হয় হয়েছেও তাই।

নভেম্বরের ৪ তারিখ ১৯২২ সাল, হাওয়ার্ড কার্টারের কর্মচারীরা কর্মরত অবস্থায় তুতেন খামেনের সমাধির প্রবেশপথে সর্বপ্রথম হোঁচট খেল। তারা রাজা Ramesses IV এর সমাধিতে প্রায় দুইলক্ষ টন ধ্বংসাবশেষ অপসারন করার পর নিচে পাথর কেটে তৈরী করা একটি সিড়ির সন্ধান পেলেন। খুড়তে খুড়তে তারা একই রকম আরো প্রায় ১৫টি সিড়ি অতিক্রম করে অবশেষে একটি প্রাচীন এবং সীল করা দরজার সামনে এসে উপস্থিত হলেন। দরজার উপর হায়ারোগ্লিফিক লিখাতে বড় করে লিখা ছিল: “তুতেন খামেন”

p20 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

তুতেন খামুনের সমাধিস্থলের নমুনা চিত্র

এর দরজাটি অতিক্রম ভেতরে ঠিক একই রকম আরেকটি দরজা পাওয়া গেল। সে দরজাটি অতিক্রম করে ভেতরে ঠিক একই রকম আরেকটি দরজা পাওয়া গেল অবশেষে সেটি অতিক্রম করে অভিযাত্রী দলটি পৌছে গেল তুতেন খামুনের সমাধিতে।

p21 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

সবচেয়ে ভেতরের কফিন

ভেতরে পাওয়া গেল স্বর্নমন্ডিত একটি কফিন। তা খুলে দেখা গেল ভেতরে ঠিক একই ধরনের আরেকটি কফিন। সে কফিন খুলে দেখা গেল তার ভেতরে ঠিক একই রকম স্বর্ণমন্তি আরেকটি কফিন এবং অবশেষে সে কফিন খুলে পাওয়া গেল তুতেন খামুনের মমিকৃত শবদেহ।

এছাড়াও সম্পূর্ণ সমাধির আশেপাশের বিভিন্ন রুমগুলোতে পাওয়া গেল অসংখ্যা মহামূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী যার বেশির ভাগই ছিল স্বর্ণমন্ডিত।

দ্রব্যসামগ্রীর কয়েকটির চিত্র নিচে দেয়া হল:

p221 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

তুতেন খামুনের কফিন


p23 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

স্বর্ণদিয়ে তৈরি ফারাও রাজাদের সৈন্যবাহিনী


p24 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

শ্বেত পাথরে তৈরী ফারাও রানীদের মূর্তি


p25 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

স্বর্ণেমন্ডিত একটি বাক্স


এ সম্পত্তির পরিমান এতই বেশি ছিল যে এক কথায় বলতে গেলে তুতেন খামুনের সমাধি আবিষ্কারের পর স্বারা পৃথিবীর মানুষ রীতিমত স্তব্ধ হয়ে যায়।

কারন তুতেন খামুন ফারাও রাজাদের মধ্যে খুবই অল্পসময় রাজত্ব করেন এবং খুবই অপরিচিত ছিলেন। তার সমাধিতেই যদি এত ধন-সম্পত্তি পাওয়া যায়। তাহলে বড় বড় সমাধিগুলোতে কত সম্পত্তি লুকানো ছিল ???

বর্তমান যুগে এটা খুবই বড় প্রশ্ন। কিন্তু ওগুলো কথা এখন আর ভেবে লাভ নেই কারন চোর-ডাকাতের বহুআগেই তা হস্তগত করে নিয়েছে।

তুতেন খামুন খুবই অপরিচিত ফারাও রাজা ছিলেন বলে চোর-ডাকাতেরা তার সমাধি খুজে পাওয়া কোন চেষ্টাই হয়তো করেনি। একারনেই আধুনিক বিশ্বের আবিষ্কৃত একমাত্র অক্ষত সমাধিটিই হল তুতেন খামুনের সমাধি।

অভিশাপের পরিনতি

যেদিন অভিযাত্রী দল প্রথম তুতেন খামুনের সমাধির হদিস ফেল সেদিন রাতেই হাওয়ার্ড কার্টার তার বাসায় ফিরে এসে তার কাজের লোকের হাতে কয়েকটি হলুদ পালক দেখতে পান। ভয়ে আতঙ্কিত কাজের লোকটির কাছে তিনি জানতে পারেন যে একটি কোবরা তার ক্যানারী পাখিটিকে খেয়ে ফেলেছে।

হাওয়ার্ড কার্টার কুসংস্কারকে মোটেই বিশ্বাস করতেন এবং তিনি মোটেও না ঘাবড়ে গিয়ে কাজের লোকটিকে এটা নিশ্চিত করতে বলেন যে সাপটি বাসার বাহিরে গিয়েছে। কাজের লোকটি হাওয়ার্ড কার্টারের হাত ধরে তাকে অনুরোধ করে বলেন:

“ফারাওদের সাপ আপনার পাখিটিকে খেয়ে ফেলেছে কারন এটি তাদের সমাধি খুজে পেতে সাহায্য করেছে। ফারাওদেরে সমাধিতে তাদের বিরক্ত করা আপনার উচিত হবেনা ।”

সত্যিকার অর্থেই ফারাওদের সুরক্ষার প্রতীক হচ্ছে কোবরা এবং শুকুন। আপনারা তুতেন খামেনের বর্মটির উপর তাকালেই দেখবেন মাথার উপর একটি কোবরার প্রতিকৃতি।

কার্টার শীঘ্রই লর্ড কার্নার্বনের কাছে একটি টেলিগ্রাম প্রেরন করেন এবং তাকে তার আবিষ্কার নিজের চোখে দেখার জন্য মিশরে আসার জন্য অনুরোধ করেন।

p26 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

Count Louis Hamon

লর্ড কার্নার্বনকে হাত দেখার জন্য বিখ্যাত Count Louis Hamon নামক তার এক বন্ধু মিশর যেতে বারন করে। কারন তিনি দুর্ঘটনাক্রমে এটা জানতে পারেন যে “লর্ড কার্নার্বন তুতেন খামেনের সমাধিতে আঘাত পেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়বেন যা কখনো সেরে উঠবে না এবং মিশরেই তিনি মৃত্যু বরণ করবেন।”

পাঁচ পাঁচটি বছর যিনি কোন প্রাপ্তির আশা না করেই তুতেন খামেনের সমাধি খোজায় অর্থ সরবরাহ করে গেলেন তার আগ্রহকে দমিয়ে রাখে তখন এমন কেউই ছিল না।

তাই লর্ড কার্নার্বন সমস্ত বাধা অতিক্রম করে মিশরে এসে পৌছলেন এবং হাওয়ার্ড কার্টারের সাথে ৩০০০ বছরের মধ্যে প্রথম কেউ সমাধিটিতে হস্তক্ষেপ করল।

p27 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

ফারাও রাজাদের সমাধিগুলোতে অভিশাপ ছিল কিনা সন্দেহ ছিল। কারন সবগুলো সমাধি আবিস্কারের পরেই দেখা গেছে সমাধিগুলো সীল করার পরেও কেউ না কেউ প্রবেশ করেছিল এবং বহনযোগ্য সম্পত্তিগুলো নিয়ে গেছে। যদি অভিশাপ থাকতোও তাও কারো না কারো উপর তা হয়তো বর্ষিত হয়ে গেছে।

কিন্তু তুতেন খামুনের সমাধিটিই ছিল একমাত্র সমাধি যাতে তাকে সমাধিত করার পর আর কেউই প্রবেশ করেনি।

একারনেই যিনি এটি প্রথম উন্মোচিত করেছেন তার উপরই অভিশাপ আরোপিত হওয়ার কথা এবং তাই হয়েছে। সম্ভবত সে কারনেই তুতেন খামুনের অভিশাপ সবার নজরে চলে আসে।

যাই হোক, লর্ড কার্নার্বন সমাধিটি খোলার পর রহস্যজনক হলেও সতিকার অর্থেই আর বেশি দিন বাঁচেন নি। সমান্য একটি মশার কামড়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন, পরে মশার কাপড়ের ক্ষতস্থান সেভ করার সময় কেটে যায় এবং ইনফ্যাকশন হয়ে তা একসময় নিউমোনিয়ায় রূপ নেয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে তাকে অতি শ্রীঘ্রই কায়রো হসপিটারলে স্থানান্তরিত করা হয়।

p28 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

ম্যারি কুরেলি

এ সময় বিতর্কিত এক ব্রিটিশ লেখিকা ম্যারি কুরেলি সতর্ক করে বলেছিলেন:

খুবই সন্মানের সাথে এবং নির্বিঘ্নে সায়িত একমাত্র অনাবিষ্কৃত ফারাও রাজার সমাধিতে এবং তার সমাধিতে রক্ষিত তার ধন সম্পদে হাস্তক্ষেপ করায় কিছু আতঙ্ক চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে – এবং এটা ছাড়া আমার মাথায় কিছুই আসছে না। আমার কাছে “The Egyptian History of the Pyramids” নামে খুবই প্রাচীন এবং দুর্লভ একটি আরবি বই রয়েছে। যাতে লিখা আছে “ ফারাও রাজার সমাধিতে অনধিকারা প্রবেশ করবে তার জন্যে অপেক্ষা করছে সবচেয়ে ভয়ংকর শাস্তি। বইটিতে কয়েকটি বিষের কথা উল্লেখ আছে এবং সেগুলো ফারাও রাজার কফিনে এতই সুচারুভাবে লাগনো আছে যে, কেউ এটা স্পর্শ করলে সে জানতেও পারবে না কিভাবে সে ভুগতে যাচ্ছে। ”

সেই জন্যেই আমি জিজ্ঞেস করছি, “এটা কি সত্যিই কোন মশার কামড় ছিল যে কারনে লর্ড কার্নার্বন এতটা অসুস্থ হয়ে গেলেন ?”

তার কথাকে সত্য প্রমানিত করে দিয়ে সমাধিটি উন্মোচিত করার মাত্র ৭ সপ্তাহের মাঝেই মাত্র ৫৭ বছর বয়সে লর্ড কার্নার্বন প্রচন্ড কষ্ট পেয়ে মারা গেলেন এবং খুবই রহস্যজনক ভাবে হাজার কিলোমিটার দূরে একই রাত্রেই তার পোষা কুকুরটি রক্ত হীম করা এবং ভৌতিক শব্দে আর্তনাদ করতে থাকে এবং এভাবেই অদৃশ্য কোন কিছুর বিরুদ্ধে প্রচন্ড গর্জন করতে করতে মৃত্যু বরণ করে। লর্ড কার্নার্বনের মৃত্যুর সময় সমস্ত কায়েরো শহরী কোন বিদ্যুতহীন অন্ধাকার সাগরে পতিত ছিল।

আরো রহস্যজনক ব্যাপার হলে এই যে, লর্ড কার্নার্বনের মৃত্যুর মাত্র দুইদিন পরে তুতেন খামুনের মমিকৃত দেহটি পর্যবেক্ষন করে দেখা যায় যে, মমিটির বাম গালে কার্নার্বনের মত ঠিক একই জায়গায় একটি ক্ষত রয়েছে।

সারা বিশ্বের পত্র-পত্রিকায় বিষয়টি খুবই ফলাও করে প্রচার করা হয় এবং অনেক পত্রিকা এটা নিয়ে বাড়াবাড়িও শুরু করে। তারা প্রচার করে সমাধির প্রবেশ পথে হায়াগ্লিফিক হরফে লিখা ছিল:

“Death shall come on swift wings to him who disturbs the peace of the King”

পত্রিকাগুলোর মতে এর অর্থ বুঝতে পারার সাথে সাথেই হাওয়ার্ড কার্টার এটি সেখান থেকে সরিয়ে ফেলেন। কারন এর অর্থ বুঝতে পারলে তার সমাধিতে কর্মরত শ্রমিকদের মনে ভয় জাগ্রত হতে পারে এবং এতে সমাধি আবিষ্কারের অভিযান থেমে যেতে পারে।

p29 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

স্যার অর্থার কোনান ডয়েল

এ সময় অনেক নামিদামী ব্যক্তি অভিশাপের অস্তিত্ত্বের পক্ষে তাদের মত প্রকাশ করেন এদের অন্যতম হলেন স্যার অর্থার কোনান ডয়েল। যার লিখা শার্লোক হোমস সারা বিশ্বের মানুষের কাছে এখনো সবচেয়ে দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা কাহিনী।

p30 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! | Techtunes

নস্ট্রাডার্মুসও

প্রায় ৫০০ বছর আগে বিখ্যাত ভবিষ্যতবানী কারক “নস্ট্রাডার্মুসও” তার বই Quatrain 9.7 এর কবিতায়ও এ ব্যাপারে ভবিষ্যত বানী করে বলেছিলেন যে:

“সেই ব্যক্তি যে খুজে পাওয়া সমাধিতে ছুটে আসবে

এবং তা উন্মুচিত করবে

কেউ প্রমান করতে পারবে না

কিন্তু তার উপর শয়তান আচর করবে

হয়তোবা তিনি কোন ব্রিটন বা নরম্যান কিং হবেন

অভিশাপের কোন প্রমানই পাওয়া যাবে না

কিন্তু অনেকের বিশ্বাসই যথেষ্ট”।

(উল্লেখ্য লর্ড কার্নার্বন একজন সম্ভ্রান্ত আর্ল সদস্য ছিলেন, যারা সম্রাটের অবর্তমানে দেশ শাসন করতো।)

যাক লর্ড কার্নার্বনের মৃত্যুর পর সবশেষ হয়েগেলেও হতো। কিন্তু আরও অনেক অস্বাভাবিক ঘটনা ঘটতে লাগলো।

p31 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

Arthur Mace

কার্নার্বনের মৃত্যুর কিছুদিন পর এ অভিযানের আরেকজন নেতৃত্বস্থানীয় প্রত্নতত্ত্ববিদ Arthur Mace একই হোটেল কন্ডিনেন্টালে প্রচন্ড রকম ক্লান্তি অনুভব করতে থাকেন এবং অভিযান দলের ডাক্তার এবং স্থানীয় ডাক্তারদেরকে হতবুদ্ধ করে দিয়ে তিনি কিছুক্ষন পরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়লেন।

George Gould নামক কার্নার্বনের একবন্ধু কার্নার্বনের মৃত্যুর কথা জানতে পেরে মিশরে রওনা করেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য সমাধিটি দেখার পরের দিনই তিনি প্রচন্ড জ্বরে ভেঙ্গে পড়েন এবং ১২ ঘন্টার মধ্যই মৃত্যুবরণ করেন।

Joel Wood নামক একজন শিল্পপতি সমাধিটি ভ্রমন করে দেশে যাওয়ার পথে প্রচন্ড জ্বরে মৃত্যু বরণ করেন ডাক্তাররা এর জন্য কোন সঠিক ব্যাখ্যা খুজে পাননি।

Archibald Reid নামক একজন রেডিওলজিস্ট তৎকালীন সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে তুতেন খামুনের এক্স-রে রিপোর্ট করে তার বয়স এবং মৃত্যুর কারন জানার চেষ্ট করেছিলেন। প্রচন্ড ক্লান্ত এই অভিযোগে তিনি ইংল্যান্ডে ফিরে যান। কিন্তু ইংল্যান্ডে অবতরনে কিছুক্ষন পরেই রহস্যজনকভাবে তার মৃত্যু ঘটে।

সমাধিটি আবিষ্কারের চার মাস পর কার্নার্বনের ব্যক্তিগত সেক্রেটারী Richard Bethell তার বিছানায় মৃত অবস্থায় পাওয়া যায় এবং এ সংবাদ শুনার পর তার পিতা আত্নহত্যা করেন।

সমাধিটি উন্মোচনের সময় কয়েকজন লোক উপস্থিত ছিলেন তার মধ্যে ১২ জনই পরবর্তি ৬ বছরের মধ্যে মারা যায় এবং অস্বাভাবিক কারনে। একই ভাবে ২ জন ছাড়া বাকী সবাইও পরবর্তি ৭ বছরের মধ্যে অস্বাভাবিকভাবে মৃত্যু বরন করেন।

লর্ড কার্নার্বনের সৎ -ভাই পাগল হয়ে যায় এবং আত্নহত্যা করে। পরবর্তিতে ধীরে ধীরে খনি খননের কাজে বিভিন্নভাবে জড়িত প্রায় ২১ জন ব্যক্তি মৃত্যুবরন করে।

খনি খননের কাজে নিয়োজন সবার মধ্যে একমাত্র হাওয়ার্ড কার্টারই বৃদ্ধ বয়স স্বাভাবিক ভাবে মৃত্যুবরণ করেন ১৯৩৯ সালে । কিন্তু সবাই তার মত ভাগ্যবান ছিলেন না।

যখন অসংখ্য মিশর গবেষক এবং শিক্ষাবিদ অভিশাপের অস্তিত্ত্ব নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছিলেন তখন অন্য অনেকেই এ অভিশাপের প্রভাবে মৃত্যুবরন করছিল।

তুতেন খামুনের সামধিতে প্রাপ্ত প্রাচীন নমুনাসমূহ নিয়ে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করার জন্য ফ্রান্স মিশরের সাথে একটি চুক্তি করে। মিশরের প্রাচীন এবং ঐতিহাসিক দ্রব্যসামগ্রী বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহীম এর বিরোধিতা করেন কারন তিনি স্বপ্নে দেখেছিলেন যদি এ দ্রব্যসামগ্রী মিশরের বাহীরে যায় তাহলে তার কি ভয়ানক পরিনতি হবে। কিন্তু তিনি আলোচনা করে সরকারকে বোঝাতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসেন এবং দিনের বেলাতেই প্রকাশ্যে সম্পূর্ণ খালি রাস্তায় তিনি একটি প্রাইভেট কারের আঘাতে সাথে সাথেই মৃত্যু বরন করেন।

সম্ভবত অভিশাপ সম্পর্কিত সবচেয়ে অদ্ভূত ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছিল Richard Adamson এর বেলায়।

তুতেন খামেনের সমাধির আবিষ্কারের ঘটনার সাথে জড়িত সবার মধ্যে ১৯৬৯ সাল পর্যন্ত বেঁচে থাকা একমাত্র ব্যক্তি ছিলেন এই Richard Adamson। তিনি লর্ড কার্নার্বনের দেহরক্ষী ছিলেন। তিনি তুতেন খামেনের অভিশাপের বিরুদ্ধে প্রথমবার যখন মুখ খোলেন তার ২৪ ঘন্টার মধ্যেই তার স্ত্রী মৃত্যুবরণ করেন। তিনি যখন পরবর্তিতে আবার জনসম্মূখে অভিশাপের বিরুদ্ধে কথা বলেন তার ছেলে একটি বিমান দূর্ঘটনায় তার কোমর ভেঙ্গে ফেলে। কিন্তু তিনি তার পরেও অভিশাপটিকে বিশ্বাস করতে রাশি ছিলেন না এবং ব্রিটিশ টেলিভিশনে এক স্বাক্ষাতকারে আবারো সেই একই কথা বলেন। সেইদিনই তিনি যখন টেলিভিশন স্টুডিও ছেড়ে যাচ্ছিলেন পথে তার ট্যাক্সি বিধ্বস্ত হওয়ার সময় তিনি যাপিয়ে পড়েন, আকস্মিকভাবে দিক পরবর্তন করা একটি গাড়ী তার মাথার মাত্র কয়েক ইঞ্চি দূর দিয়ে চলে যায়। হয়তো কর্মক্ষেত্র একসময় দেহরক্ষী হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় আত্নরক্ষার কিছু কায়দা তার জানা ছিল। শরীরের কয়েক জায়গায় ফ্রাকচার এবং থেঁতলানো অবস্থায় তাকে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানেই ৭০ বছরের জীবনে প্রথম বারের মত তিনি অভিশাপটির কথা শিকার করেন।

অভিশাপটি সবচেয়ে বড় প্রমানের আরেকটি ঘটেছিল ১৯৭২ সালে। যখন তুতেন খামেনের সমাধির মূল্যবান দ্রব্যসামগ্রী লন্ডনে ব্রিটিশ মিউজিয়ামের খুবই খ্যাতিমান একটি প্রদর্শনীতে আনা হয়েছেল। এ ঘটনাটি ঘটেছিল পূর্বে উল্লেখিত মিশরের প্রাচীন এবং ঐতিহাসিক দ্রব্যসামগ্রী বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ ইব্রাহীম এর পরবর্তি ঐ একই পদে অধিষ্ঠিত Dr Gamal Mehrez এর ক্ষেত্রে। তিনি তুতেন খামুনের প্রতি উপহাস করে বলেছিলেন “আমি আমার সারা জীবন মিশরের প্রত্নতত্ত্ব গবেষনায় কাটিয়েছি এবং আমি জানি তুতেন খামুনের অভিশাপ সম্পর্কিত সমস্ত দুর্ঘটনা শুধু নিছক দুর্ঘটনাই এগুলো সত্যিকার অর্থেই কাকতালীয়”। হয়তো এ কথা বলার কারনেই, হয়তোবা কাকতালীয় ভাবেই ইংল্যান্ডের রয়েল এয়ার ফোর্স প্লেনে বয়ে আনা তুতেন খামুনের সমাধির প্রাচীন দ্রব্য সামগ্রী বোঝাই বাক্সগুলো পরিদর্শন শেষে পরবর্তি রাতেই তার মৃত্যু ঘটে।

ইংল্যান্ডে সেই রয়েল এয়ার ফোর্সের বিমানে ক্রু-রাও পরবর্তি জীবনে অস্বাভাবিক মৃত্যু, শারীরিক দুর্ঘটনা, দূর্ভাগ্য, দুর্যোগ ইত্যাদিতে পতিত হয়।

Flight Lieutenant Rick Laurie died চার বছরের মাথায় হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু বরন করেন। কেউ হয়তো তখন এটাকে তুতেন খামুনের অভিশাপ বলে মনে করেননি। কিন্তু Rick Laurie এর wife প্রকাশ্যে সবার সামনে ঘোষনা করেন তুতেন খামুনের অভিশাপেই তার মৃত্যু হয়েছে।

যে সময়ে তুতেন খামুনের সমাধির দ্রব্যসামগ্রী ইংল্যান্ডে আনা হয়েছিল প্রতিবছর ঠিক Ken Parkinson নামক সেই বিমান একজন ইঞ্জিনিয়ার হার্ট-অ্যাটাকে আক্রান্ত হত। এভাবেই ১৯৭৮ সালেই হার্ট-অ্যাটাকে আক্রান্ত হয়ে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।

Rick Laurie এবং Ken Parkinson পূর্বে কখনোই হার্ট-অ্যাটাকে পতিত হন নি এবং মিলিটারী ডাক্তারা তাদেরকে সম্পূর্ণ ফিট বলে ঘোষানা করেছিল।

সেই ফ্লাইটের সময় Chief Technical Officer ‍“Ian Lansdown” কৌতুক করে তুতেন খামুনের মৃতদেহ বহনকারী বাক্সটিকে লাথি মেরে বলেছিল দুনিয়া সবচেয়ে দামি জিনিসকে লাথি মারলাম হা হা হা। কিছুদিন পরেই অন্য একটি প্লেন থেকে নামার সময় তার পায়ের নিচের প্লেনের সিড়িটি আকস্মিকভাবেই ভেঙ্গে পড়ে এবং “Ian Lansdown” সেই পাটি মারাত্নকভাবে ভেঙ্গে যায়।

সেই ফ্লাইটে অবস্থানকারী Jim Webb নামক একজন ফ্লাইট ল্যাফটেন্যান্ট এর সমন্ত ধন-সম্পত্তি আগুনে পুড়ে ধ্বংস হয়ে যায়।

সেই ফ্লাইটের Brian Rounsfall নামক একজন পানীয় ও খাবার পরিবেশন কারী তুতেন খামুনের শবদেহ বহনকারী কফিনের উপর কার্ড খেলেছিল বলে শিকার করে। তিনিও পর পর দু্ইবার হার্ট-অ্যাটাকের পর রহস্যজনকভাবে মৃত্যুবরণ করেন।

সেই বিমানেরই একজন মহিলা অফিসারকে একটি গুরুত্বপূর্ণ অভিযানের পর ইংল্যান্ডের রয়েল এয়ার ফোর্স টিম থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।

অনেকেই বলেন অভিশাপের কোন ভিত্তি নেই এর সবচেয়ে বড় প্রমান হাওয়ার্ড কার্টার। সমাধিটি খোলার বহু পূর্ব থেকেই যিনি তার এর উপর কাজ করে আসছিলেন এবং এ সমাধিতে প্রাপ্ত হাজার হাজার দ্রাব্যাদির ক্যাটলগ তৈরি করে এবং কোথায় কোন জিনিস কিভাবে ছিল তার ছবি বা নমুনা তৈরি করে যিনি তার জীবন অনেক সময় ব্যয় করেছেন এ অভিশাপ যদি থাকতই তাহলে তাকে সবার আগে আক্রমন করত। কিন্তু এমন কিছুই ঘটেনি।

অভিশাপকে বিশ্বাস করে এমন অনেকেরই মত সম্ভবত মিশরের প্রতি হাওয়ার্ড কার্টারের ভালোবাসাই তাকে রক্ষা করেছে। লর্ড কার্নার্বন তুতেন খামুনের সমাধি আবিষ্কারে অর্থ সহায়তা দেন ঠিকই তবে একেবারেই নিঃস্বার্থভাবে নয়। তুতেন খামুনের সমাধি আবিষ্কারের পর তিনি সমাধির সকল দ্রব্যাদি ইংল্যান্ডে নিজে যাওয়ার ব্যবস্থা করছিলেন।

তখন মিশরের ইতিহাস ও ঐতিয্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হাওয়ার্ড কার্টার এর বিরোধিতা করেছিলেন । একজন ইংলিশ হওয়া সত্ত্বেও ১৭ বছর বয়স থেকেই তিনি মিশরের বিভিন্ন সমাধির প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংরক্ষনের জন্য কাজ করে আসছিলেন এবং জীবনের শেষ মূহুর্ত্য পর্যন্ত মিশর নিয়েই কাজ করে গেছেন। একারনেই অভিশাপটিকে সম্পূর্ণরূপে অবিশ্বাস করা সত্ত্বেও মিশরের প্রতি তার ভালোবাসাই হয়ে গিয়েছিল তার রক্ষাকারী শক্তি। তার কবরের বেদীর উপর লিখা এপিট্যাপ থেকেই তা বোঝা যায়। এপিট্যাপটি নিম্নরূপ:

“May your spirit live,

May you spend millions of years,

You who love Thebes,

Sitting with your face to the north wind,

Your eyes beholding happiness”

(উল্লেখ্য যে: ঠিক একই জিনিস তুতেন খামুনের সমাধিতেও লিখিত ছিল।)

hawass তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |
জাহী হাওয়াজ

এ অভিশাপটি এমন কোন ব্যাপার না যে তা শুধু কুসংস্কারাচ্ছন্ন এবং অশিক্ষিত লোকেরাই এটা বিশ্বাস করে। অনেক বিজ্ঞ এবং বিজ্ঞান মনস্ক মানুষও এটা বিশ্বাস করেন বলে মত দেন। স্যার আর্থার কোনান ডয়েলের পর এ অভিশাপে বিশ্বাসীদের অন্যতম আন্তর্জাতিকভাবে বিখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ জাহী হাওয়াজ। মিশরের বিভিন্ন সমাধি নিয়ে কাজ করায় তার রয়েছে দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা। ২০০৫ সাল তুতেন খামুনের শবদেহের সর্বশেষ যে ত্রিমাতৃক CT Scan করা হয় সেই দলের তত্ত্বাবধায়ক ছিলেন তিনি নিজেই।

তিনি বলেন “আমি অভিশাপের সম্ভাবনা নাকচ করে দিচ্ছি না কারন আজকে আমার জীবনে বহুত কিছু ঘটে গিয়েছে। আজকের দিনে আমাদের দল খুবই মারত্নক একটি দুর্ঘটনায় পড়ে গিয়েছিল কিন্তু সামান্যর জন্য বেঁছে গিয়েছি। আমরা যখন CT Scan করছিলাম তখন বাহিরে প্রচন্ড ঝড় শুরু হয়েছিল এবং আমাদের CT Scan করার কম্পিউটারটি কোন কারন ছাড়াই দু’ঘন্টা যাবৎ সম্পূর্ণরূপে বন্ধ ছিল”।

সর্বশেষ তিনি এই বলে কথা শেষ করেন যে,

“I think we should still believe in the curse of the Pharaohs”

আসলেই রহস্য রয়েই গেছে এবং থাকবে। কারন বছরের পর বছর ধরে একই সমাধির দ্রব্যসামগ্রীর সাথে জড়িত অসংখ্য মানুষ কাকতালীয়ভাবে মরে যাচ্ছে এটা বিশ্বাস করার চেয়ে অভিশাপে বিশ্বাস স্থাপন করা অনেক সহজ।

p33 তুতেন খামেনের অভিশাপ এবং এর রহস্যময় পরিনতি!!! |

হয়তো সত্যিই ৩৫০০ পূর্বের পবিত্রভাবে শায়িত ফারাও মমিগুলোকে রক্ষাকারী এক অন্ধকার এবং অতি-পাকৃত শক্তি এখনো পৃথিবীর বুকে সবার অগোচরে অফুরন্ত রহস্যের এবং দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়ে এখনো রয়ে গেছে।

উপরে কথাগুলো মিথ্যাও হতে পারে আবার সত্যও হতে পারে।

বিজ্ঞান যেহেতু প্রমান করতে পারেনি এগুলো মিথ্যা সেকারনেই এগুলো অবিশ্বাস করারও মানে নেই।

আবার, তেমনি যেহেতু বিজ্ঞান এটাও প্রমানও করেনি যে এগুলো সত্যিই সম্ভব তাই এগুলো বিশ্বাস করার মানেও নেই।

আমি এত জ্ঞানী নই যে কোনটি সঠিক আর কোনটি বেঠিক তা নির্ণয় করতে পারবো। তবে অসংখ্য সাক্ষ্য যখন চোখে পড়ার পরও আমরা না দেখার ভান করে থাকি এবং কাকতালীয় বলে চালিয়ে দেই তখন সত্যিই আমরা মনে প্রশ্ন ঝিলিক দিয়ে উঠে।

আসলেই কোনটি সঠিক ??????

(এ প্রশ্নে জবাব আমার কাছে নেই। তবে আপনাদের মতামতের অপেক্ষায় রইলাম)

আপনাদের সবাইকে অনেক ধন্যবাদ।










“অবতার” চলচ্চিত্রের ইতিহাসে আসলেই এক অবতার

টিউন করেছেন : অনুপম শুভ | প্রকাশিত হয়েছে : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১০ |

মুক্তির পরপরই সারা বিশ্বে সাড়া ফেলে দিয়েছে অবতার। ছবিটির সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য, হলিউডের ইতিহাসে যে কয়টি ছবি আধুনিক প্রযুক্তির উপর নির্ভর করে তৈরি করা হয়েছে অবতার তার মধ্যে একটি।জেমস্‌ ক্যামেরন সবসময়ই প্রযুক্তির ভক্ত।আর, অবতারের বেলায় তিনি এমন সব প্রযুক্তি ব্যবহার করেছেন যা তিনি আগে কোন ছবিতে ব্যবহার করেননি।তাই, ক্যামেরন একমাত্র অবতার দিয়েই ঘুরিয়ে দিয়েছেন হলিউডের চলচ্চিত্র নির্মানের ইতিহাস।


সংক্ষেপে অবতার ছবির কাহিনী এরকম….

“প্যানডোরা” নামক অনিন্দ্য সুন্দর দ্বীপ গ্রহকে অধিকার করার উদ্দেশ্য নিয়ে “অবতার” নামক মিশন শুরু করে পৃথিবীবাসী।প্যানডোরাতে বাস করে দশ ফুট লম্বা নাভি নামের এক জাতি। আর, মানুষ প্যানডোরাতে নিঃশ্বাস নিতে পারে না। ছবির প্রধান চরিত্র জ্যাক সালিকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধেই যুক্ত করা হয় অবতার মিশনে।তাকে পরিণত করা হয় একজন নাভি অবতারে যাতে সে প্যানডোরাতে গিয়ে নিঃশ্বাস নিতে পারে ও নাভিদের সাথে মিশতে পারে। কিন্তু প্যানডোরাতে গিয়ে জ্যাক, ন্যাইতিরি নামের এক নাভি মেয়ের প্রেমে পড়ে। শুরু হয় অবতার মিশনের প্রতি তার দায়বদ্ধতা এবং নাভিদের প্রতি তার মমত্ববোধের মধ্যে টানাপোড়েন। একসময় নাভিদের পক্ষ নিয়েই অবতার মিশনের সদস্যদের সাথে শুরু হয় জ্যাকের যুদ্ধ, যা শেষ অব্দি ঠিক করে নাভিদের ভাগ্য।

ক্যামেরন অবতার প্রজেক্টের কাজ শুরু করেন ১৯৯৪ সালে। টাইটানিক নির্মাণের পর ১৯৯৯ সালেই তিনি অবতারের কাজ শুরু করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু অবতারের জন্য যে প্রযুক্তি তিনি ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন তখন তা ছিলো না। তাই ২০০৬ সালে তিনি আবার নতুন করে অবতারের স্ক্রিপ্ট লেখেন। শুরু হয় এক নতুন ইতিহাস গড়ার পালা।

দেখা যাক প্রযুক্তি প্রেমিক ক্যামেরন তার অবতার ছবিতে কি কি প্রযুক্তির ছোঁয়া এনেছেন….
সিজিআই-এর সাহায্যে পারফরমেন্স ক্যাপচার….

অবতারের প্রতিটি অংশে Computer Generated Image (CGI) প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যাবহার করেছেন ক্যামেরন। এই প্রযুক্তি তিনি “টারমিনেটর টু” এবং “টোটাল রিকল” ছবিতে ব্যবহার করেন। তবে অবতারের বেলেয় তিনি ব্যবহার করেন একেবারে হাল আমলের প্রযুক্তি “Image-based facial performance capture”। এর জন্য অভিনয়ের সময় নায়ক-নায়িকারা ব্যাবহার করে ক্যামেরা সংযুক্ত বিশেষ ধরণের হেডগিয়ের। যার ফলে তাদের মুখের ভাব-ভঙ্গি সাথে সাথেই বসিয়ে দেয়া সম্ভব হচ্ছিল কম্পিউটারে তৈরি করা ভার্চুয়াল চরিত্রদের মুখে। ফলে প্রত্যেকটা চরিত্রকেই অনেক বাস্তবসম্মত ভাবেই ফুটিয়ে তোলা সম্ভব হয়েছে।
ডিজিটাল অ্যানিমেশন…

পুরো ছবিটির অ্যানিমেশনের কাজ করেছে নিউজিল্যান্ড ভিত্তিক কোম্পানি “ওয়েটা ডিজিটাল”। এই ছবির সম্পূর্ণ অ্যানিমেশনের কাজ শেষ করতে সময় লাগে প্রায় এক বছর। ছবিতে প্রতিটি গাছ, প্রতিটি পাতা, এমনকি প্রতিটি পাথরকেও আলাদা করে ব্লেন্ড করা হয়েছে। এজন্য ব্লেন্ডিং, লাইটিং ও শেডিং এর আধুনিক সব প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। আর, এই সকল অ্যানিমেশন সংরক্ষণ করার জন্য প্রয়োজন হয়েছে প্রায় ১ পেটাবাইট (১০০০ টেরাবাই) পরিমান হার্ডডিক্স মেমরী।
স্টেরিওস্কোপিক থ্রিডি ফিউশন ক্যামেরা সিস্টেম….

থ্রিডি টেকনোলজির প্রতি ক্যামেরুনের অনুরাগ অনেক আগে থেকেই। আর তারই ধারাবাহিকতায় সর্বকালের সবচেয়ে অগ্রসর ক্যামেরা সিস্টেম ব্যাবহার করেছেন অবতার ছবিতে। এই ক্যামেরা সিস্টেমের নাম “ফিউশন ক্যামেরা সিস্টেম”। লাইভ অ্যাকশন দৃশ্য ও কম্পিউটারে তৈরি করা দৃশ্যের মাঝে যাতে বিন্দুমাত্র গ্যাপ না থাকে সে জন্যই এই সিস্টেমের ব্যবহার করা হয়।
ভার্চুয়াল ক্যামেরা ও সিমুল ক্যাম…

মোশন ক্যাপচারের জন্য সর্বাধুনিক প্রযুক্তির নাম ভার্চুয়াল ক্যামেরা ও সিমুল ক্যাম। আর এই প্রযুক্তিরই ব্যপক ব্যবহার ঘটানো হয়েছে অবতারে। অবতারের ভার্চুয়াল বিশ্বের ছবিকে বাস্তবসম্মত ভাবে উপস্থাপন করার জন্য ক্যামরন মোশন-ক্যাপচারড রেজাল্টকে রিয়েল টাইম সেট আপে ধারণ করেন। CGI ভিত্তিক চরিত্র ও পরিবেশকে একটিমাত্র ফিউশন আইপিএসে ধরা হয়েছে সিমুল-ক্যামের সাহায্যে। যার ফলে ক্যামেরায় চোখ রেখে সাধারণ লাইভ অ্যাকশনের দৃশের মতই দেখতে পেয়েছেন CGI দৃশ্যগুলোকে।

ছবিতে অভিনয়ের সময় অভিনেতা-অভিনেত্রীরা মোশন ক্যাপচার পোশাক পড়ে ঘুড়ে বেড়িয়েছেন। এই পোশাকে সংযুক্ত ছিল বিশেষ ধরনের সেন্সর, যাতে করে তাদের শরীরের প্রতিটা মুভমেন্টকে নিঁখুতভাবে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। এ ছবিতে ব্যাবহার করা হয় বিশেষ হাই ডেফিনেশন থ্রিডি ক্যামেরা। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের মুখের মাত্র ২.৫ ইঞ্চি দূরে বসানো ছিলো দু’টি সনি HDC-F950 হাই ডেফিনেশন ক্যামেরা। যাতে করে তাদের মুখের প্রতিটি পেশীর নড়াচড়াও ধারণ করা সম্ভব হয়।

সতি বলতে পরিচালক হিসেবে জেমস্‌ ক্যামেরনের তুলনা হয় না। টাইটানিক ছবির জন্য অস্কার জেতার পরে তিনি মঞ্চে উঠে বলেছিলেন “I’m the king of the world”…আর অবতারের পর আসলেই স্বীকার করতে হচ্ছে তিনি “কিং অব দ্যা ওয়ার্ল্ড” আর সবই সম্ভব হয়েছে তার অসাধারণ প্রযুক্তিপ্রেমের কারণে। একমাত্র প্রযুক্তিপ্রেমের কারণেই অবতার গড়তে পেরেছে চলচ্চিত্র শিল্পে নতুন ইতিহাস।

বুধবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০১০

ক্ষুধার্ত থেকো, বোকা থেকো

স্টিভ জবস বিশ্বখ্যাত কম্পিউটার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যাপল ও অ্যানিমেশন স্টুডিও পিক্সারের (টয় স্টোরি, ফাইন্ডিং নিমো, মনস্টার ইনকরপোরেটেড, ওয়াল-ই, আপ-এর মতো অসাধারণ অ্যানিমেশন তৈরি করেছেন) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা। যুক্তরাষ্ট্রের স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন বক্তা হিসেবে ২০০৫ সালে আমন্ত্রিত হয়েছিলেন স্টিভ জবস। সে বছর ১২ জুন এক ঝাঁক তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থীর সেই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যে ভাষণটি তিনি দিয়েছিলেন, সেটি সত্যিই অসাধারণ।
ভাষান্তর সিমু নাসের 

প্রথমেই একটা সত্য কথা বলে নিই। আমি কখনোই বিশ্ববিদ্যালয় পাস করিনি। তাই সমাবর্তন জিনিসটাতেও আমার কখনো কোনো দিন উপস্থিত হওয়ার প্রয়োজন পড়েনি। এর চেয়ে বড় সত্য কথা হলো, আজকেই কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান সবচেয়ে কাছে থেকে দেখছি আমি। তাই বিশ্বের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে নিজেকে অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি। কোনো কথার ফুলঝুরি নয় আজ, স্রেফ তিনটা গল্প বলব আমি তোমাদের। এর বাইরে কিছু নয়।
আমার প্রথম গল্পটি কিছু বিচ্ছিন্ন বিন্দুকে এক সুতায় বেঁধে ফেলার গল্প।
ভর্তি হওয়ার ছয় মাসের মাথাতেই রিড কলেজে পড়ালেখায় ক্ষ্যান্ত দিই আমি। যদিও এর পরও সেখানে আমি প্রায় দেড় বছর ছিলাম, কিন্তু সেটাকে পড়ালেখা নিয়ে থাকা বলে না। আচ্ছা, কেন আমি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়লাম?
এর শুরু আসলে আমার জন্মেরও আগে। আমার আসল মা ছিলেন একজন অবিবাহিত তরুণী। তিনি তখন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন। আমার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নেওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। তিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, আমাকে এমন কারও কাছে দত্তক দেবেন, যাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি আছে। সিদ্ধান্ত হলো এক আইনজীবী ও তাঁর স্ত্রী আমাকে দত্তক নেবেন। কিন্তু একদম শেষ মুহূর্তে দেখা গেল, ওই দম্পতির কারোরই বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি নেই, বিশেষ করে আইনজীবী ভদ্রলোক কখনো হাইস্কুলের গণ্ডিই পেরোতে পারেননি। আমার মা তো আর কাগজপত্রে সই করতে রাজি হন না। অনেক ঘটনার পর ওই দম্পতি প্রতিজ্ঞা করলেন, তাঁরা আমাকে অবশ্যই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবেন, তখন মায়ের মন একটু গলল। তিনি কাগজে সই করে আমাকে তাঁদের হাতে তুলে দিলেন।
এর ১৭ বছর পরের ঘটনা। তাঁরা আমাকে সত্যি সত্যিই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়েছিলেন। কিন্তু আমি বোকার মতো বেছে নিয়েছিলাম এমন এক বিশ্ববিদ্যালয়, যার পড়ালেখার খরচ প্রায় তোমাদের এই স্ট্যানফোর্ডের সমান। আমার দরিদ্র মা-বাবার সব জমানো টাকা আমার পড়ালেখার পেছনে চলে যাচ্ছিল। ছয় মাসের মাথাতেই আমি বুঝলাম, এর কোনো মানে হয় না। জীবনে কী করতে চাই, সে ব্যাপারে আমার কোনো ধারণা নেই এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ালেখা এ ব্যাপারে কীভাবে সাহায্য করবে, সেটাও বুঝতে পারছিলাম না। অথচ মা-বাবার সারা জীবনের জমানো সব টাকা এই অর্থহীন পড়ালেখার পেছনে আমি ব্যয় করছিলাম। তাই আমি বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম এবং মনে হলো যে এবার সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে। সিদ্ধান্তটা ভয়াবহ মনে হলেও এখন আমি যখন পেছন ফিরে তাকাই, তখন মনে হয়, এটা আমার জীবনের অন্যতম সেরা সিদ্ধান্ত ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় ছেড়ে দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমি ডিগ্রির জন্য দরকারি কিন্তু আমার অপছন্দের কোর্সগুলো নেওয়া বন্ধ করে দিতে পারলাম, কোনো বাধ্যবাধকতা থাকল না, আমি আমার আগ্রহের বিষয়গুলো খুঁজে নিতে লাগলাম।
পুরো ব্যাপারটিকে কোনোভাবেই রোমান্টিক বলা যাবে না। আমার কোনো রুম ছিল না, বন্ধুদের রুমের ফ্লোরে ঘুমোতাম। ব্যবহূত কোকের বোতল ফেরত দিয়ে আমি পাঁচ সেন্ট করে কামাই করতাম, যেটা দিয়ে খাবার কিনতাম। প্রতি রোববার রাতে আমি সাত মাইল হেঁটে হরেকৃষ্ণ মন্দিরে যেতাম শুধু একবেলা ভালো খাবার খাওয়ার জন্য। এটা আমার খুবই ভালো লাগত। এই ভালো লাগাটাই ছিল গুরুত্বপূর্ণ।
রিড কলেজে সম্ভবত দেশে সেরা ক্যালিগ্রাফি শেখানো হতো সে সময়। ক্যাম্পাসে সাঁটা পোস্টারসহ সবকিছুই করা হতো চমত্কার হাতের লেখা দিয়ে। আমি যেহেতু আর স্বাভাবিক পড়ালেখার মাঝে ছিলাম না, তাই যে কোনো কোর্সই চাইলে নিতে পারতাম। আমি ক্যালিগ্রাফি কোর্সে ভর্তি হয়ে গেলাম। সেরিফ ও স্যান সেরিফের বিভিন্ন অক্ষরের মধ্যে স্পেস কমানো-বাড়ানো শিখলাম, ভালো টাইপোগ্রাফি কীভাবে করতে হয়, সেটা শিখলাম। ব্যাপারটা ছিল সত্যিই দারুণ সুন্দর, ঐতিহাসিক, বিজ্ঞানের ধরাছোঁয়ার বাইরের একটা আর্ট। আমি এর মধ্যে মজা খুঁজে পেলাম।
এ ক্যালিগ্রাফি জিনিসটা কোনো দিন বাস্তবজীবনে আমার কাজে আসবে—এটা কখনো ভাবিনি। কিন্তু ১০ বছর পর আমরা যখন আমাদের প্রথম ম্যাকিন্টোস কম্পিউটার ডিজাইন করি, তখন এর পুরো ব্যাপারটাই আমার কাজে লাগল। ওটাই ছিল প্রথম কম্পিউটার, যেটায় চমত্কার টাইপোগ্রাফির ব্যবহার ছিল। আমি যদি সেই ক্যালিগ্রাফি কোর্সটা না নিতাম, তাহলে ম্যাক কম্পিউটারে কখনো নানা রকম অক্ষর (টাইপফেইস) এবং আনুপাতিক দূরত্বের অক্ষর থাকত না। আর যেহেতু উইন্ডোজ ম্যাকের এই ফন্ট সরাসরি নকল করেছে, তাই বলা যায়, কোনো কম্পিউটারেই এ ধরনের ফন্ট থাকত না। আমি যদি বিশ্ববিদ্যালয় না ছাড়তাম, তাহলে আমি কখনোই ওই ক্যালিগ্রাফি কোর্সে ভর্তি হতাম না এবং কম্পিউটারে হয়তো কখনো এত সুন্দর ফন্ট থাকত না। অবশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে এক সুতায় বাঁধা অসম্ভব ছিল, কিন্তু ১০ বছর পর পেছনে তাকালে এটা ছিল খুবই পরিষ্কার একটা বিষয়।
আবার তুমি কখনোই ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলোকে এক সুতায় বাঁধতে পারবে না। এটা কেবল পেছনে তাকিয়েই সম্ভব। অতএব, তোমাকে বিশ্বাস করতেই হবে, বিচ্ছিন্ন ঘটনাগুলো একসময় ভবিষ্যতে গিয়ে একটা অর্থবহ জিনিসে পরিণত হবেই। তোমার ভাগ্য, জীবন, কর্ম, কিছু না কিছু একটার ওপর তোমাকে বিশ্বাস রাখতেই হবে। এটা কখনোই আমাকে ব্যর্থ করেনি, বরং উল্টোটা করেছে।
আমার দ্বিতীয় গল্পটি ভালোবাসা আর হারানোর গল্প।
আমি খুব ভাগ্যবান ছিলাম। কারণ, জীবনের শুরুতেই আমি যা করতে ভালোবাসি, তা খুঁজে পেয়েছিলাম। আমার বয়স যখন ২০, তখন আমি আর ওজ দুজনে মিলে আমাদের বাড়ির গ্যারেজে অ্যাপল কোম্পানি শুরু করেছিলাম। আমরা পরিশ্রম করেছিলাম ফাটাফাটি, তাই তো দুজনের সেই কোম্পানি ১০ বছরের মাথায় চার হাজার কর্মচারীর দুই বিলিয়ন ডলারের কোম্পানিতে পরিণত হয়। আমার বয়স যখন ৩০, তখন আমরা আমাদের সেরা কম্পিউটার ম্যাকিন্টোস বাজারে ছেড়েছি। এর ঠিক এক বছর পরের ঘটনা। আমি অ্যাপল থেকে চাকরিচ্যুত হই। যে কোম্পানির মালিক তুমি নিজে, সেই কোম্পানি থেকে কীভাবে তোমার চাকরি চলে যায়? মজার হলেও আমার ক্ষেত্রে সেটা ঘটেছিল। প্রতিষ্ঠান হিসেবে অ্যাপল যখন বড় হতে লাগল, তখন কোম্পানিটি ভালোভাবে চালানোর জন্য এমন একজনকে নিয়োগ দিলাম, যে আমার সঙ্গে কাজ করবে। এক বছর ঠিকঠাকমতো কাটলেও এর পর থেকে তার সঙ্গে আমার মতের অমিল হতে শুরু করল। প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ তার পক্ষ নিলে আমি অ্যাপল থেকে বহিষ্কৃত হলাম। এবং সেটা ছিল খুব ঢাকঢোল পিটিয়েই। তোমরা বুঝতেই পারছ, ঘটনাটা আমার জন্য কেমন হতাশার ছিল। আমি সারা জীবন যে জিনিসটার পেছনে খেটেছি, সেটাই আর আমার রইল না।
সত্যিই এর পরের কয়েক মাস আমি দিশেহারা অবস্থায় ছিলাম। আমি ডেভিড প্যাকার্ড ও বব নয়েসের সঙ্গে দেখা করে পুরো ব্যাপারটার জন্য ক্ষমা চাইলাম। আমাকে তখন সবাই চিনত, তাই এই চাপ আমি আর নিতে পারছিলাম না। মনে হতো, ভ্যালি ছেড়ে পালিয়ে যাই। কিন্তু সেই সঙ্গে আরেকটা জিনিস আমি বুঝতে পারলাম, আমি যা করছিলাম, সেটাই আমি সবচেয়ে বেশি ভালোবাসি। চাকরিচ্যুতির কারণে কাজের প্রতি আমার ভালোবাসা এক বিন্দুও কমেনি। তাই আমি আবার একেবারে গোড়া থেকে শুরু করার সিদ্ধান্ত নিলাম।
প্রথমে মনে না হলেও পরে আবিষ্কার করলাম, অ্যাপল থেকে চাকরিচ্যুতিটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে ভালো ঘটনা। আমি অনেকটা নির্ভার হয়ে গেলাম, কোনো চাপ নেই, সফল হওয়ার জন্য বাড়াবাড়ি রকমের কৌশল নিয়ে ভাবার অবকাশ নেই। আমি প্রবেশ করলাম আমার জীবনের সবচেয়ে সৃজনশীল অংশে।
পরবর্তী পাঁচ বছরে নেক্সট ও পিক্সার নামের দুটো কোম্পানি শুরু করি আমি, আর প্রেমে পড়ি এক অসাধারণ মেয়ের, যাকে পরে বিয়ে করি। পিক্সার থেকে আমরা পৃথিবীর প্রথম কম্পিউটার অ্যানিমেশন ছবি টয় স্টোরি তৈরি করি, আর এখন তো পিক্সারকে সবাই চেনে। পৃথিবীর সবচেয়ে সফল অ্যানিমেশন স্টুডিও। এরপর ঘটে কিছু চমকপ্রদ ঘটনা। অ্যাপল নেক্সটকে কিনে নেয় এবং আমি অ্যাপলে ফিরে আসি। আর লরেনের সঙ্গে চলতে থাকে আমার চমত্কার সংসার জীবন।
আমি মোটামুটি নিশ্চিত, এগুলোর কিছুই ঘটত না, যদি না অ্যাপল থেকে আমি চাকরিচ্যুত হতাম। এটা ছিল খুব বাজে, তেতো একটা ওষুধ আমার জন্য, কিন্তু দরকারি। কখনো কখনো জীবন তোমাকে ইটপাটকেল মারবে, কিন্তু বিশ্বাস হারিয়ো না। আমি নিশ্চিত, যে জিনিসটা আমাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিল সেটা হচ্ছে, আমি যে কাজটি করছিলাম, সেটাকে আমি অনেক ভালোবাসতাম। তোমাকে অবশ্যই তোমার ভালোবাসার কাজটি খুঁজে পেতে হবে, ঠিক যেভাবে তুমি তোমার ভালোবাসার মানুষটিকে খুঁজে বের করো। তোমার জীবনের একটা বিরাট অংশজুড়ে থাকবে তোমার কাজ, তাই জীবন নিয়ে সত্যিকারের সন্তুষ্ট হওয়ার একমাত্র উপায় হচ্ছে এমন কাজ করা, যে কাজ সম্পর্কে তোমার ধারণা, এটা একটা অসাধারণ কাজ। আর কোনো কাজ তখনই অসাধারণ মনে হবে, যখন তুমি তোমার কাজটিকে ভালোবাসবে। যদি এখনো তোমার ভালোবাসার কাজ খুঁজে না পাও, তাহলে খুঁজতে থাকো। অন্য কোথাও স্থায়ী হয়ে যেয়ো না। তোমার মনই তোমাকে বলে দেবে, যখন তুমি তোমার ভালোবাসার কাজটি খুঁজে পাবে। যেকোনো ভালো সম্পর্কের মতোই, তোমার কাজটি যতই তুমি করতে থাকবে, সময় যাবে, ততই ভালো লাগবে। সুতরাং খুঁজতে থাকো, যতক্ষণ না ভালোবাসার কাজটি পাচ্ছ। অন্য কোনোখানে নিজেকে স্থায়ী করে ফেলো না।
আমার শেষ গল্পটির বিষয় মৃত্যু।
আমার বয়স যখন ১৭ ছিল, তখন আমি একটা উদ্ধৃতি পড়েছিলাম—‘তুুমি যদি প্রতিটি দিনকেই তোমার জীবনের শেষ দিন ভাব, তাহলে একদিন তুমি সত্যি সত্যিই সঠিক হবে।’ এ কথাটা আমার মনে গভীরভাবে রেখাপাত করেছিল এবং সেই থেকে গত ৩৩ বছর আমি প্রতিদিন সকালে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে জিজ্ঞেস করি—আজ যদি আমার জীবনের শেষ দিন হতো, তাহলে আমি কি যা যা করতে যাচ্ছি, আজ তা-ই করতাম, নাকি অন্য কিছু করতাম? যখনই এ প্রশ্নের উত্তর একসঙ্গে কয়েক দিন ‘না’ হতো, আমি বুঝতাম, আমার কিছু একটা পরিবর্তন করতে হবে।
পৃথিবী ছেড়ে আমাকে একদিন চলে যেতে হবে, এ জিনিসটা মাথায় রাখার ব্যাপারটাই জীবনে আমাকে বড় বড় সব সিদ্ধান্ত নিতে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে। কারণ, প্রায় সবকিছুই যেমন, সব অতি প্রত্যাশা, সব গর্ব, সব লাজলজ্জা আর ব্যর্থতার গ্লানি—মৃত্যুর মুখে হঠাত্ করে সব নেই হয়ে যায়, টিকে থাকে শুধু সেটাই, যা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। তোমার কিছু হারানোর আছে—আমার জানা মতে, এ চিন্তা দূর করার সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে, সব সময় মনে রাখা যে একদিন তুমি মরে যাবে। তুমি খোলা বইয়ের মতো উন্মুক্ত হয়েই আছ। তাহলে কেন তুমি সেই পথে যাবে না, যে পথে তোমার মন যেতে বলছে তোমাকে?
প্রায় এক বছর আগের এক সকালে আমার ক্যানসার ধরা পড়ে। ডাক্তারদের ভাষ্যমতে, এর থেকে মুক্তির কোনো উপায় নেই আমার। প্রায় নিশ্চিতভাবে অনারোগ্য এই ক্যানসারের কারণে তাঁরা আমার আয়ু বেঁধে দিলেন তিন থেকে ছয় মাস। উপদেশ দিলেন বাসায় ফিরে যেতে। যেটার সোজাসাপটা মানে দাঁড়ায়, বাসায় গিয়ে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত হও। এমনভাবে জিনিসটাকে ম্যানেজ করো, যাতে পরিবারের সবার জন্য বিষয়টা যথাসম্ভব কম বেদনাদায়ক হয়।
সারা দিন পর সন্ধ্যায় আমার একটা বায়োপসি হলো। তাঁরা আমার গলার ভেতর দিয়ে একটা এন্ডোস্কোপ নামিয়ে দিয়ে পেটের ভেতর দিয়ে গিয়ে টিউমার থেকে সুঁই দিয়ে কিছু কোষ নিয়ে এলেন। আমাকে অজ্ঞান করে রেখেছিলেন, তাই কিছুই দেখিনি। কিন্তু আমার স্ত্রী পরে আমাকে বলেছিল, চিকিত্সকেরা যখন এন্ডোস্কোপি থেকে পাওয়া কোষগুলো মাইক্রোস্কোপের নিচে রেখে পরীক্ষা করা শুরু করলেন, তখন তাঁরা কাঁদতে শুরু করেছিলেন। কারণ, আমার ক্যানসার এখন যে অবস্থায় আছে, তা সার্জারির মাধ্যমে চিকিত্সা সম্ভব। আমার সেই সার্জারি হয়েছিল এবং দেখতেই পাচ্ছ, এখন আমি সুস্থ।
কেউই মরতে চায় না। এমনকি যারা স্বর্গে যেতে চায়, তারাও সেখানে যাওয়ার জন্য তাড়াতাড়ি মরতে চায় না। কিন্তু মৃত্যুই আমাদের গন্তব্য। এখনো পর্যন্ত কেউ এটা থেকে বাঁচতে পারেনি। এমনই তো হওয়ার কথা। কারণ, মৃত্যুই সম্ভবত জীবনের অন্যতম প্রধান আবিষ্কার। এটা জীবনের পরিবর্তনের এজেন্ট। মৃত্যু পুরোনোকে ঝেড়ে ফেলে ‘এসেছে নতুন শিশু’র জন্য জায়গা করে দেয়। এই মুহূর্তে তোমরা হচ্ছ নতুন, কিন্তু খুব বেশি দিন দূরে নয়, যেদিন তোমরা পুরোনো হয়ে যাবে এবং তোমাদের ঝেড়ে ফেলে দেওয়া হবে। আমার অতি নাটুকেপনার জন্য দুঃখিত, কিন্তু এটাই আসল সত্য।
তোমাদের সময় সীমিত। কাজেই কোনো মতবাদের ফাঁদে পড়ে, অর্থাত্ অন্য কারও চিন্তাভাবনার ফাঁদে পড়ে অন্য কারও জীবনযাপন করে নিজের সময় নষ্ট কোরো না। যাদের মতবাদে তুমি নিজের জীবন চালাতে চাচ্ছ, তারা কিন্তু অন্যের মতবাদে চলেনি, নিজের মতবাদেই চলেছে। তোমার নিজের ভেতরের কণ্ঠকে অন্যদের শেকলে শৃঙ্খলিত করো না। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো, নিজের মন আর ইনটুইশনের মাধ্যমে নিজেকে চালানোর সাহস রাখবে। ওরা যেভাবেই হোক, এরই মধ্যে জেনে ফেলেছে, তুমি আসলে কী হতে চাও। এ ছাড়া আর যা বাকি থাকে, সবই খুব গৌণ ব্যাপার।
আমি যখন তরুণ ছিলাম, তখন দি হোল আর্থ ক্যাটালগ নামের অসাধারণ একটা পত্রিকা প্রকাশিত হতো; যেটা কিনা ছিল আমাদের প্রজন্মের বাইবেল। এটা বের করতেন স্টুয়ার্ড ব্র্যান্ড নামের এক ভদ্রলোক। তিনি তাঁর কবিত্ব দিয়ে পত্রিকাটিকে জীবন্ত করে তুলেছিলেন।
স্টুয়ার্ট ও তাঁর টিম পত্রিকাটির অনেক সংখ্যা বের করেছিল। সত্তরের দশকের মাঝামাঝি সময়ে, আমার বয়স যখন ঠিক তোমাদের বয়সের কাছাকাছি, তখন পত্রিকাটির শেষ সংখ্যা প্রকাশিত হয়। বিদায়ী সেই সংখ্যার শেষ পাতায় ছিল একটা ভোরের ছবি। তার নিচে লেখা ছিল—ক্ষুধার্ত থেকো, বোকা থেকো। এটা ছিল তাদের বিদায়কালের বার্তা। ক্ষুধার্ত থেকো, বোকা থেকো। এবং আমি নিজেও সব সময় এটা মেনে চলার চেষ্টা করেছি। আজ তোমরা যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি ছেড়ে আরও বড়, নতুন একটা জীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছ, আমি তোমাদেরও এটা মেনে চলার আহ্বান জানাচ্ছি।
ক্ষুধার্ত থেকো, বোকা থেকো।
তোমাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

পি এইচ পি এর ধারাবাহিক টিউটোরিয়াল:পর্ব-৫(অপারেটরস)

টিউন করেছেন : রেজওয়ান | প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১০ |

অপারেটরস ভ্যালু বা ভ্যারিয়েবলকে manipulate করতে ব্যাবহৃত হয়।৩ ধরনের অপারেটর আছে

১.Unary – একটা ভ্যালু বা ভ্যারিয়েবলকে(operand) নিয়ে কাজ করে।

২.Binary-দুটি ভ্যালু বা ভ্যারিয়েবলকে নেয়।

৩.Ternary- ৩টি ভ্যালু বা ভ্যারিয়েবলকে নিয়ে থাকে।

এর পাশাপাশি আমরা Operator গুলোকে অনেকভাবে শ্রেনীবদ্ধ করতে পারি যেমন-Arithmetic, Assignment, Comparison Operator etc.

Assignment Operator: এ Operators গুলো একটা ভ্যালু বা ভ্যারিয়েবলকে অন্য একটা ভ্যালু বা ভ্যারিয়েবলের সমান করতে ব্যাহৃত হয়।

$my_var = 4;

$another_var = $my_var;

এখন $my_var ও $another_var উভয়েরই মান হল ৪.

Operator


English


Example

+


Addition


2+4

-


Subtraction


6-2

*


Multiplication


5*3

/


Division


15/3

%


Modulus


43%10

PHP Code

$addition = 2 + 4;

$subtraction = 6 – 2;

$multiplication = 5 * 3;

$division = 15 / 3;

$modulus = 5 % 2;

echo “Perform addition: 2 + 4 = “.$addition.”
”;

echo “Perform subtraction: 6 – 2 = “.$subtraction.”
”;

echo “Perform multiplication: 5 * 3 = “.$multiplication.”
”;

echo “Perform division: 15 / 3 = “.$division.”
”;

echo “Perform modulus: 5 % 2 = ” . $modulus

সেভ করে রান করান এমন দেখাবে-

Perform addition: 2 + 4 = 6
Perform subtraction: 6 – 2 = 4
Perform multiplication: 5 * 3 = 15
Perform division: 15 / 3 = 5
Perform modulus: 5 % 2 = 1.

Comparison Operator

এই Operator ভ্যালু বা ভ্যারিয়েবল এর মধ্যে relationship চেক করে।এই Operator কন্ডিশনাল statement এর ভিতর থাকে আর নির্নয় করে statement true নাকি false.

এখানে বহুল ব্যাবহৃত কিছু Comparison Operator দেয়া হল-

$x=4 ও $y=5 ধরে

Operator


English


Example


Result

==


Equal to


$x=$y


False

!=


Not equal to


$x!=$y


True

<


Less than


$x<$y


True

>


Greater than


$x>$y


False

<=


Less than equal to


$x<=$y


True

>=


Greater than equal to


$x>=$y


False

String Operator

এটাতো আগেই আমরা দেখেছি আর ব্যাবহারও করেছি-“”, ‘’

Arithmetic এবং Assignment Operator এর Combination

Programming এ একটা পরিচিত কাজ হচ্ছে একটা ভ্যারিয়েবলকে নির্দিষ্ট হারে বাড়ানো,যেমন গননার ক্ষেত্রে।আমি যদি ১ করে বাড়াতে চাই তাহলে

$counter=$counter+1;

যাহোক সংক্ষেপে এভাবে লেখে

$counter+=1;

Pre/Post-Increment & Pre/Post-Decrement:

উপরেরটা একটু অদ্ভুত মনে হতে পারে,এটার আরেকটা সর্টকাট মেথড আছে কোন ভ্যরিয়েবল থেকে ১ করে বাড়ানো বা কমানোর

$x++ যেটা $x += 1; or $x = $x + 1 এর সমান।

আর কমানোর ক্ষেত্রে শুধু “-” অপারেটরটা ব্যাবহৃত হবে।

Logical Operator
Operator Description Example
&& and x=6
y=3(x < 10 && y > 1) returns true
|| or x=6
y=3(x==5 || y==5) returns false
! not x=6
y=3!(x==y) returns true

চলবে………

পরবর্তী টিউটোরিয়াল Conditional Statement(if,elseif etc.)